আল-কোরআন থেকেঃ

পবিত্র কুরআন মাজীদে ইরশাদ করেন,  

ان الله ملائكته يصلون على النبى يا ايها الذين امنوا صلوا عليه وسلموا تسليما – 

অর্থাৎ আল্লাহ ও তাঁর ফেরেস্তাগন রাসূলে মাকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি (সদা-সর্বদা) দরুদ পাঠ করে থাকেন। হে ঈমানদারগণ তোমরা ও সেই নবীর প্রতি বেশি বেশি শ্রদ্ধাসহকারে দুরুদ (সালাত ও সালাম) পাঠকর। (সূরাহ আহযাব, আয়াত নং- ৫৬)

দুরদ অর্থ হচ্ছে অনুগ্রহ, কল্যাণ প্রার্থনা করা।

আল-হাদিস থেকেঃ 

Note: → কুরআন ও হাদিসে দুরুদ শরীফ বেশি বেশি পড়ার কথা বলা হয়েছে। তাই যেসব সময় দুরুদ পড়া নিষিদ্ধ (নিচে সর্বজন স্বীকৃত ফতোয়ার কিতাব দ্বারা আলোচনা করা হয়েছে) তা ব্যতীত সারাদিন দুরুদ পড়া জায়েজই নয় বরং সর্বোত্তম। 

দলীল নং- ০১: 


Ubayy bin Ka‘b narrated: I said, "O Allah’s Messenger, I invoke blessings upon you very frequently. How much of my supplication should I devote to you?” He said, "As much as you like." I said, "May it be a quarter?" He said, "As much as you like, but if you make an increase in that it would be better for you." I said, "May it be a half?" He said, "As much as you like, but in case you make an increase in it that would be better for you." I said, "May these be two thirds?" He said, "As much as you like but if you make an increase in it, it would be better." I said, "May I devote the whole of my supplication to you (that I make in my prayer)?" Thereupon he said, "In that case you would be free from care and your sins would be forgiven. 

শেষ অংশের অনুবাদঃ

দোজাহানের কান্ডারী রাহমাতুল্লিল আলামীনের প্রখ্যাত সাহাবী হযরত উবাই ইবনে কা’আব (রাঃ) আল্লাহর হাবীবকে লক্ষ্য করে বললেনঃ


اجعل لك صلواتى كلها قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا يكفي همك و يغفر لك ذنبك  – 

অর্থাৎ (লম্বা হাদিস এর শেষ অংশ)....ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমি কি আপনার প্রতি সব সময় দুরুদ পাঠ করতে পারি? তখন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করলেন তাহলে তো তোমার চিন্তামুক্ত হওয়ার জন্য ইহাই যথেষ্ট হবে এবং তোমার সকল পাপ ও ক্ষমা করা হবে। 


Reference 

►Tirmidhi has graded it hasan (fair) and saheeh (sound) in his al-Jami‘-us-saheeh, b. of sifat-ul-qiyamah (description of Doomsday) ch.23, (4: 637 # 2457)


দলীল নং- ০২: 

عن عبد الله بن عمرو بن العاص رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا سمعتم المؤذن فقولوا مثل ما يقول . ثم صلوا علي الخ  – 

অর্থাৎ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) থেকে বর্নিত তিনি বলেন রাসূলে মাকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নবুয়াতী জবানে ইরশাদ করেন- ‘যখন তোমরা মুয়াজ্জিনের আযান শুনবে তখন তোমরা তাই বলো যা মুয়াজ্জিন বলবে। অতঃপর (যখন আযান শেষ হবে) তোমরা আমি নবীর প্রতি (দো’আ করার পূর্বে) দরুদ পাঠ করো, যে ব্যক্তি আমার উপর ১ বার দুরুদ পাঠ করবে আল্লাহ তার জন্য ১০টি নেকী (কল্যাণ) দান করবেন। 


References 

►Muslim, as-Saheeh, b. of salat (prayer) ch.7 (1: 288-9 # 384)
►Abu Dawood, Sunan, b. of salāt (prayer) 1: 144 (# 523)
►Tirmidhi, al-Jami‘-us-saheeh, b. of manaqib (virtues and merits of the Prophet and his companions) ch.1 (5: 586-7 # 3614)
►Nasai Sunan, b. of adhān (the call to prayer) 2: 25-6
►Ahmad bin Hambal, Musnad (2:168)
►Ibn Khuzaymah, as-Saheeh, 1: 219 (# 418)
►Muhammad Khateeb Tabraizi, Mishkat-ul-Masabeeh, b. of salat (prayer) ch.5 (1: 215 # 657)
►Husayn bin Masood Baghawi, Sharh-us-sunnah, 2: 284-5 (# 421)
►Ala’-ud-Din ‘Ali, Kanz-ul-‘Ummal, 7: 700 (# 20998)

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর প্রতি দুরুদ পাঠ করার ফজীলতঃ বিস্তারিত এখানে:

(পর্ব ১)http://sunni-encyclopedia.blogspot.com/2017/10/blog-post_25.html?m=1

(পর্ব ২)
http://sunni-encyclopedia.blogspot.com/2017/10/blog-post_97.html?m=1



ফতোয়া থেকেঃ


দলীল নং- ০১: 

জগত বিখ্যাত ফাতাওয়ার কিতাব ফাতাওয়ায়ে শামীর মধ্যে বর্নিত আছে

ومستحبة فى كل اوقات الامكان اى حيث لا مانع  

অর্থাৎ নিষিদ্ধ স্থান ও সময় ব্যতীত অন্য যে কোন মুহুর্তে দরুদ ও সালাম পাঠ করা মুস্থাহাব।  এখন প্রশ্ন হবে কোন কোন স্থানে দরুদ ও সালাম পাঠ করা নিষেধ? তার জবাবে  আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী (রাহঃ) ঐ (শামী) কিতাবের একই পৃষ্ঠায় একটু অগ্রসর হয়ে দ্ব্যার্থহীন ভাষায় বর্ননা করেছেন   

تكره الصلاة عليه صلى الله عليه و سلم فى سبعة مواضع . 

অর্থাৎ সাত স্থানে আল্লাহর হাবীরের উপর দরুদ ও সালাম পাঠ করা নিষেধ। তাছাড়া অন্য সবক্ষেত্রে সর্বাবস্থায় পাঠ করা মুস্তাহাব। নিষিদ্ধ স্থান সমূহ নিম্মরূপঃ-

(১) স্বামী-স্ত্রীর মিলন কালে। 
(২) প্রশ্রাব-পায়খানার সময়। 
(৩) ব্যবসায়ী সামগ্রী প্রচারার্থে। 
(৪) হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার সময়। 
(৫) আশ্চার্যজনক কোন ঘটনা শ্রবনকালে। 
(৬) জবেহ করার সময়। 
(৭) এবং হাঁছি দেওয়ার সময়।



দলীল নং- ০২: 

মক্কা শরীফের ফাতাওয়ার কিতাব ইয়ানাতুত তালেবীন যা লিখেছেন আল্লামা বিক্রী (রাহঃ) যিনি ছিলেন মক্কা শরীফের একজন প্রসিদ্ধ মুফতী। তিনি তার কিতাবে উল্লেখ করেছেনঃ

قال الشيخ الكبير البكرى انها تسن قبلهما اى الصلوة على النبى  صلى الله عليه و سلم قبل الاذان والاقامة . – 

অর্থাৎ তিনি বলেন আযান এবং ইকামাত উভয়ের পূর্বেই দরুদ ও সালাম পাঠ করা মুস্তাহাব।

দলীল নং- ০৩: 

আল্লামা ইমাম কাজী আয়াজ (রাহঃ) রাসূলে মাকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠ করার মুস্তাহাব স্থান সমূহ বর্ননা করতে গিয়ে ইরশাদ করেছেনঃ

ومن مواطن الصلاة عليه  صلى الله عليه و سلم  عند ذكره و سماع اسمه او كتابته او عند الاذان 

অর্থাৎ দরুদ ও সালাম পাঠ করার মুস্তাহাব ওয়াক্ত সমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আলোচনা কালে, তাঁর নাম মোবারক শ্রবনকালে ও লিখার সময় এবং আযানের পূর্বে।  এখানে عند(ইন্দা) শব্দের অর্থ হলো পূর্বে।

দলীল নং- ০৪: 

তাফসীরে রুহুল বয়ানের লিখক বিশ্ব বিখ্যাত মুফাস্সির আল্লামা ঈসমাইল হাক্কী (রাহঃ) সূরাহ আহযাবের ৫৬নং আয়াতের ব্যাখায় দরুদ ও সালাম পাঠের মুস্তাহাব স্থান সমূহ বর্ননা করতে গিয়ে তিনি বলেনঃ
عند الابتداء كل امر ذى بال  
অর্থাৎ প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ ও ভাল কাজ শুরু করার পূর্বে দরুদ ও সালাম পাঠ করা মুস্তাহাব।



Top