তাকবীরে তাহ্‌রীমার পর পুরুষ নাভীর নিচে আর মহিলা বুকের বা সিনার উপর ডান হাতের 'কর' বাম হাতের করের উপর স্থাপন করবে । পুরুষ কোন অবস্থায়ই সিনার উপর হাত বাঁধবে না । কথিত আহলে-হাদীস সম্প্রদায় মহিলাদের ন্যায় সিনার উপর হাত বেঁধে নামায পড়ে । ইমাম আযম আবু হানিফা, ইমাম সুফিয়ান সওরী ও ইমাম ইসহাক প্রমুখ বলেন যে, পুরুষের জন্য নাভীর নিচে ও মহিলার জন্য বুকের উপর হাত বাঁধা সুন্নাত । এর খেলাফ করলে নামায মাকরুহ হবে । নিচে প্রমানাদি পেশ করা হবেঃ

১) আবূ দাউদ শরীফে হাদীস বর্নিত হয়েছেঃ
 হযরত আবূ ওয়াইল হতে বর্নিত আছে, হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন, নামাযের মধ্যে এক হাত অন্য হাতের উপর রেখে নাভীর নিচে স্থাপন করবে ।
[1]

২) দারে কুতনী, বায়হাকী ও আবূ দাউদ গ্রন্থে উল্লেখ আছেঃ
 আল্লামা ইমাম নববী (রহঃ) মুসলিম শরীফে ব্যাখ্যাগ্রন্থে বলেছেন যে, হযরত আলী (রাঃ) বলেছেনঃ নামাযের মধ্যে নাভীর নিচে হাত স্থাপন করা সুন্নাতের অন্তর্ভূক্ত ।
[1]

৩) হিদায়া গ্রন্থের ১ম খন্ডের ৮৬ পৃষ্ঠায় আছেঃ
 রাসূল (সঃ) এরশাদ করেছেনঃ ডান হাত-বাম হাতের উপর রেখে নাভীর নিচে স্থাপন করা সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত ।
[2]

৪) তিরমিযি শরীফে আছেঃ
 হযরত কাবীসা ইবনে হলব তার পিতা হলব (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ রাসুলুল্লাহ (সঃ) যখন আমাদের ইমামতি করতেন, তখন তিনি ডান হাত দিয়ে বাম হাত ধরতেন ।
ইমাম তিরমিযী (রঃ) বলেন, সাহাবী, তাবেয়ী ও পরবর্তী যুগের আলিমগন এই হাদীস অনুসারে আমল করেছেন । তবে হাত রাখার ব্যাপারে আলিমগন মতভেদ করেছেন । যেমন কেউ কেউ উভয় হাত নাভীর উপর স্থাপন করার অভিমত প্রকাশ করেছেন । আবার কেউ কেউ নাভীর নিচে স্থাপন করার অভিমত দিয়েছেন । আলিমগনের নিকট এই উভয় নিয়মের অবকাশ রয়েছেন ।[3]

৫) ইমাম মুহাম্মদ (রঃ) এর কিতাবুল আ-ছারে আছে নবী করিম (সঃ) নাভীর নিচে বাম হাতের কব্জির উপর ডান হাতের তালু রাখতেন ।[4]

৬) সহীহ আবু দাউদে আছে, হযরত আলী (রাঃ) বলেছেনঃ নাভীর নিচে এক হাত অন্য হাতের উপর রাখা নামাজের সুন্নাত ।[5]

৭) আওজাযুল মাসালিক নামক কিতাবে উল্লেখ হয়েছঃ
হযরত আনাস(রাঃ) হতে বর্নিত, তিনি বলেনঃ তিনটি নবীদের আখলাকী কাজ বা আদর্শ । যথাঃ সূর্য অস্ত যাওয়ার পরই ইফতার করা, সাহরী দেরী করে খাওয়া, তৃতীয় নামাযের মধ্যে নাভীর নিচে ডান হাতকে বাম হাতের উপর রেখে নামায আদায় করা ।[6]

৮) উক্ত কিতাবে আরো বর্নিত আছেঃ
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ নাভির নিচে ডান হাতের পাঞ্জাকে বাম হাতের উপর রেখে নামায আদায় করা সঠিক নিয়ম ।[6]

৯) মসনদে ইবনে আবি শায়বা হাদীস গ্রন্থে লিখিত আছে যে,
 হযরত ওয়াসেল (রাঃ) বলেনঃ আমি নবী করিম (সঃ) কে নাভীর নিচে বাম হাতের উপর ডান হাত বাঁধতে দেখেছি ।
আল্লামা আবূ তাইয়েব মাদানী বলেছেন, মসনদে ইবনে আবি শায়বার হাদিসটি সহিহ; সনদ অতি সহীহ্‌ । এটাই হানাফী মাযহাবের দলিল ।[7]

১০) হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্নিত আছে-
 হযরত আলী (রাঃ) বলেছেনঃ নামাযের মধ্যে হাত বাঁধা সুন্নাত এবং দুই হাত নাভীর নিচে স্থাপন করবে ।
[8]

১১) সহীহ মুসলিমের টিকায় উল্লেখ হয়েছে যে,
ইমাম শাফেয়ীর প্রসিদ্ধ মতে ও অধিকাংশ আলিমের মতে দুই হাত বুকের নিচে নাভীর উপর রাখবে । ইমাম আবু হানিফা , সুফিয়ান সাওরী; ইসহাক ও আবূ ইসহাকের মতে নাভীর নিচে দুই হাত রাখবে এবং হযরত আলী (রাঃ)-এর নিকট হতে দুই প্রকার হাদীস বর্নিত হয়েছে । ইমাম আহমদ এক মতে বলেন, বুকের নিচে নাভীর উপরে হাত বাঁধবে । আর এক মতে বলেন- নাভীর নিচে হাত বাঁধবে ।
উল্লেখ্য যে, পুরুষ লোকের হাত বাঁধবার ব্যবস্থা হাদীস ও সাহাবাগনের পথ মত হতে প্রমানিত হয়েছে; কিন্তু স্ত্রীলোকের পক্ষে এতদ্‌সম্বন্ধে কোনই ব্যবস্থা হাদীসের দ্বারা সাব্যস্ত হয় নাই । কাজেই ইমাম আযম কিয়াস করে বলেছেন যে, স্ত্রীলোকেরা নামাযে দুই হাত বুকের উপর বাঁধবে । এটাতে তাঁদের পর্দা রক্ষা হবে- কাপড় খুলতে পারবে না ।[9]


১২) উলুমুল হাদীস গ্রন্থে ইবনে ছালা লিখেছেনঃ
খোযায়মা 'বুকের উপর হাত রাখা' এই কথাটি অতিরিক্ত বর্ননা করেছেন; কিন্তু সেটা প্রমানিত নয় ।[10]

আকুদোল জওয়াহের গ্রন্থে বর্নিত আছে- নবী করীম (সঃ) নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রেখেছিলেন, এটাই সহিহ্‌; কিন্তু 'বুকের উপর হাত রাখা' কথাটি সহিহ্‌ নয় ।[10]

উপরোক্ত দলীলসমূহের দ্বারা প্রতিভাত হল যে, ইমাম আয'ম আবূ হানিফা ও তার অনুসারীগনের নামাযে নাভীর নিচে হাত রাখার সিদ্ধান্ত খেয়াল-খুশী মত নয় বরং সহীহ হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে । সুতরাং পুরুষগন বুকের উপর হাত না রেখে নাভীর নিচে হাত রেখে নামাজ পড়তে পারেন, তজ্জন্য আল্লাহপাক আমাদের সকলকে তওফীক দান করুন । আমীন ![11]


1.আনোয়ারুল মুকাল্লেদিন, কৃত ই,ফা,বা পৃঃ ৫২
2.হিদায়া, ১ম খন্ড, পৃঃ ৮৬
3.জামে তিরমিযী শরীফ, মুতারজম উর্দূ, পৃঃ ১৭০
4.তুহ্‌ফাতুল মু'মিনীন, কৃতঃ মাওঃ শামসুদ্দীন মোহনপুরী, পৃঃ ৭৮
5.আবূ দাউদ শরীফ, পৃঃ ১১১
6.আওযাজুল মাসালিক, ১ম খন্ড, পৃঃ ১১৯
7.সাইফুল মুকছেদীন, মাওঃ মুহাব্বাতপুরী
8.রাযীন (হাদীস গ্রন্থ), পৃঃ ২১৬
9.তুহ্‌ফাতুল মু'মিনীন, কৃতঃ মাওঃ শামসুদ্দীন মোহনপুরী, পৃঃ ৭৯-৮০
10.সাইফুল মুকাল্লেদীন, কৃতঃ মাওঃ ইব্রাহীম মুহাব্বাতপুরী, পৃঃ ১২৩
11.হানাফীদের কয়েকটি জরুরী মাসায়েল (লেখকঃ মাওলানা মোঃ আবু বকর সিদ্দীক)



সহীহ হাদীসের নামে ওহাবীদের মিথ্যাচার

এক ব্যক্তির পোষ্ট দেখলাম যাতে তিনি বুকের উপর হাত বাঁধাকে সমর্থন করেছেন যা মিথ্যায় পরিপূর্ন ছিল । তিনি সেখানে নির্দিধায় মিথ্যা লিখেছেন। তাঁর মতে-
সালাতে নাভির নীচে হাত বাঁধার কথা সহীহ হাদীসে নেই। বরং হাত বুকের উপর বাঁধার কথা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

প্রথমে পোষ্টটি এখানে ছিল। কিন্তু মিথ্যাচার ধরা পড়ে যাবার পর পোষ্টটি লেখক নিজেই সরিয়ে নিয়েছেন
http://sonarbangladesh.com/blog/abdur_rouf66/42616

উক্ত পোষ্টের লেখক আবদুর রউফ তাঁর মনগড়া উক্তি
প্রমান করতে যে হাদিস উল্লেখ করেন তা হলো-
"হযরত সাহল ইবনে সাদ (রা) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন নামাজে লোকদেরকে ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর স্থাপন করার নির্দেশ দেয়া হত।"(বুখারী-১ম খণ্ড)

পাঠকগণ ভালো করে খেয়াল করুন এই হাদীস কোনভাবেই হাত বুকের উপর বাধার সামান্যতম প্রমান নেই।

এরপর তিনি (আবদুর রউফ ভাই)একটি মুনকার হাদীস পেশ করেছেন। হাদীসটি হল ওয়াইল বিন হুজর(রা) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, “আমি নবী করিম (সা) এর সাথে সালাত আদায় করেছি। (আমি দেখেছি) নবী (সা) স্বীয় ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে বুকের উপর রাখলেন।”

এর পর আবদুর রউফ ভাই রেফারেন্স পেশ করেছেন:
১. বুখারী। হাদীসটি বুখারী শরীফে নেই। যে কেউ চাইলে পুরাতন আরবী বুখারী শরীফ খুলে দেখুন। বরং ইমাম বুখারী এই হাদীসের রাবী মুয়াম্মেল ইবন ইসমাঈলকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন (মুনকার হাদীস জাল বা বানোয়াট হাদীসের সবচেয়ে নিকটবতী )। অতএব ইমাম বুখারী(র:) মত অনুযায়ী হাদীসটি মুনকার। এবং আল্লাম ইবনুল কায়্যিম যিনি ইমাম ইবনে তাইমিয়া(যাকে ওহাবীরা সব থেকে বেশী মান্যগণ্য করে) এর শিষ্য তিনি ইলামুল মুয়াককিয়ীন গ্রন্থে বলেছেন বুকের উপর হাত বাধার কথাটুকু মুয়াম্মেল ইবন ইসমাঈল নামক রাবীর নিজস্ব বৃদ্ধি। এতএব আল্লামা ইবনুল কায়্যিমের মত অনুযায়ী হাদীসটি মাউযু (বানোয়াট)। এতএব এই হাদীসটি মাউযু(বানোয়াট) কমপক্ষে মুনকার।
তাছাড়া সুফইয়ান সাউরীর অন্যান্য শিষ্যরা তাদের বর্নিত হাদীসে এই অংশটি উল্লেখ করেননি।

২.মুসলিম। মুসলিম শরীফের এ বিষয়ে হাদীস আছে কিন্তু তাতে বুকের উপর কথাটি নেই। যে কেউ ইচ্ছা করলে পুরাতন আরবী মুসলিম শারীফ খুলে নিজে দেখে নিতে পারেন।

তাহলে বুখারী এবং মুসলিমের রেফারেন্স কেন দেয়া হল ??? তাদের অন্যতম প্রধান নেতা আলবানী যে তার জীবদ্দশায় বলে গেছে সহীহ হাদীস খালি বুখারী ও মুসলিম শারীফে আছে! হাদীসের মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে আরও বলেছিল পুরুষ ও মহিলাদের নামায পড়ার নিয়ম এক! এগুলোকে সত্য প্রমাণ করার জন্য ???

৩. আত তিরমীযি। তিরমিযী শরীফে হাত বাধার বিষয়ে বর্নিত হাদীসটি হল : কুতায়বা (র)....... কাবীসা ইবন হুলব তার পিতা হুলব (রা)থেকে বর্ননা করেন যে, তিনি বলেন : “রাসূল (সা) যখন আমাদের ইমামত করতেন তখন ডান হাত দিয়ে তার বাম হাত ধারন করতেন।”
এই বিষয়ে ওয়াইল ইবন হুজর, গুতায়ফ ইবনুল হারিছ, ইবন আব্বাস,ইবন মাসউদ ও সাহল ইবন সাদ (রা) থেকে হাদীস বর্নিত আছে।
ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (র) বলেন হুলব বর্নিত হাদীসটি হাসান।
সাহাবী তাবিঈ ও পরবতী যুগের আলিমগন এই হাদীস অনুসারেই আমল করেছেন। তারা সালাতে বাম হাতের উপর ডান হাত রাখার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কেউ কেউ উভয় হাত নাভীর উপর স্থাপন করার আর কেউ কেউ নাভীর নীচে স্থাপন করার অভিমত দিয়েছেন। তবে আলিমগনের নিকট উভয় সুরতেরই অবকাশ রয়েছে।
হুলব (রা) এর নাম হল ইয়াযীদ ইবন কুনাফা আত তাঈ। (তিরমীযি হাদীস নং ২৫২)
আমি হাদীসটি আপনার নিকট হুবুহু উপস্থাপন করলাম। আপনারা নিজেরা তিরমিযী শারীফের অরিজিনাল আরবী বইটা খুলে দেখতে পারেন। বলূনতো হাদীসটির কোন শব্দে বুকের উপর কথাটি আছে ??? তবে তিরমিযীর রেফারেন্স কেন দেয়া হল ???

৪. নাসাঈ শরীফ : নাসাঈ শরীফে সালাতে বাম হাতের উপর ডান হাত রাখার স্থান নামক অনুচ্ছেদে ওয়ায়িল ইবন হুজর (রা)থেকে বর্নিত হাদীসের কোথাও বুকের উপর কথাটি নেই। এবারও আপনারা নিজেরা নাসাঈ শারীফের আরবীটা খুলে দেখতে পারেন।
তাহলে কেন বুকের উপর হাত বাধার ব্যাপারে নাসাঈ শরীফের রেফারেন্স দেয়া হল ???

৫. আবু দাউদের বর্ননা :
আমাদের নিকট বর্ননা করেছেন আবু তাওবা থেকে আলহায়সামু অর্থাত ইবন হুমায়দ থেকে সাওরী থেকে সুলায়মান বিন মুসা থেকে তাউস (র) তিনি বলেন রাসূল (সা) নামাজরত অবস্থায় ডান হাত বাম হাতের উপর স্থাপন করে তা নিজের বুকের উপর বেধে রাখতেন।
# প্রথমতঃ হাদীসটি মুরসাল। এবং অধিকাংশ মুহাদ্দিসের মতে মুরসাল হাদীস যঈফ মারদুদ (দুবল ও বর্জনীয় )। এবং যেহেতু ফিকহের ক্ষেত্রেও আপনারা মুহাদ্দিসেকিরামের মত প্রাধান্য দিচ্ছেন তাই আপনারা এই হাদীস দিয়ে দলীল দিতে পারেন না। এবং দলীল দিতে চাইলেও বলতে হবে হাদীসটি যঈফ। কেননা এটি মুরসাল হাদীস।
তাহলে কিভাবে একটি যঈফ ও মারদুদ (দু্বর্ল ও বজর্ণীয়) হাদীসকে সহীহ বলার অপচেষ্টা করা হল ? স্পষ্ট করে বলূন কিভাবে এটি সহীহ হাদীস ?
# দ্বিতীয়তঃ হাদীসটির রাবী (বর্ননাকারী) সুলায়মান বিন মুসা মৃত্যুর পূবে স্মৃতিশক্তি লোপজনিত দূবলতায় পড়েছিলেন। তাই তার হাদীস আর সহীহ থাকেনি।
# তৃতীয়তঃ হাদীসটির সনদ খেয়াল করুন সেখানে বলা হচ্ছে সাওরী থেকে সুলায়মান বিন মুসা। অথচ সাওরী(র) এর মত হল নাভীর নিচে হাত বাধা।
# চতুর্থতঃ আবু দাউদ তার মারাসীলেএ্ই হাদীসাটি সংকলন করেছেন কিন্তু তাতে ছুম্মা ইয়াশুদ্ধু বায়নাহুমা এর স্থলে রয়েছে ছুম্মা ইয়াসবিকু বিহিমা আলা সদরিহি।
এতএব আবু দাউদ গ্রন্থে থাকা বুকের উপর হাত বাধার একটিমাত্র হাদীস তাতেও আবার যঈফের বহু কারন বিদ্যমান। এতএব সমস্ত দিক বিবেচনায় হাদীসটি আবু দাউদের নাভীর নীচে হাত বাধার হাদীসের চেয়ে অধিক দূবল।
আরও বিস্তারিত জানতে এটা ডাউনলোড করে পৃ- ২০ থেকে পড়া শুরু করুন
http://www.mediafire.com/download/8g5q7zh2lal7t8k/Nasiruddin+Al+Albani.pdf

এবার আমরা ইবনে মাজাহর হাদীসটি পর্যালোচনা করব : আসুন আমরা হাদীসটি বিভিন্ন গ্র্রন্থে সনদ সহ দেখি---
সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ৮০৯


আমাদেরকে বর্ননা করেছেন উসমান ইবন্আবী শায়বা আমাদের বর্ননা করেছেন আবুল আহওয়াস থেকে সিমাক বিন হারব থেকে কাবীসা বিন হালব থেকে তার পিতা তিনি বলেন: নবী (সা) আমাদের সালাতে ইমামতি করতেন এবং তিনি তার ডান হাত দিয়ে বাম হাত ধরতেন।
কাবীসাহ ইবন হালব থেকে তার পিতা বলেন রাসূল (সা) কে আমি তার ডান দিক থেকে এবং বাম দিক থেকে ফিরে যেতে দেখেছি। আর তাকে দেখেছি এটিকে (হাতকে) তার বুকের উপর রাখতে।
হাদীসটি আরো বর্নিত হয়েছে দারা কুতনীতে কিন্তু তাতে বুকের উপর অংশটি নেই।
আর তিরমিযী ও মুসনাদে আহমাদেও হাদীসটি বর্নিত হয়েছে তাতে বুকের উপর অংশটি নেই।
এবং হালব এর হাদীসটি সিমাক বিন হারব এককভাবে বর্ননা করেছেন। অর্থাত রাবী সিমাক একক সকল বর্ননায়। আর একাধিক জারাহ তাদীলের্ ইমাম তাকে শিথিল (দুর্বল) বলেছেন। আর নাসাই বলেছেন তিনি যদি কোন মূল মতন এককভাবে বণনা করে তাহলে তা দলীল হবে না। কারন তাকে যুগিয়ে দেয়া হত আর তিনি যোগান গ্রহন করতেন (মীযানুল ইতিদাল খ ২ পৃ২৩২)

এতএব আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে বুখারী মুসলিম তিরমিযী নাসঈ এর কোনটিতেই বুকের উপর হাত বাধার ব্যাপারে কোন হাদীস নেই। আবু দাউদ এবং ইবন মাজাহতে আছে যা অত্যন্ত দূবল। এবং এই দুবর্লতার কারন দেয়া হল। এবং ইবনে খুযায়মার বর্ণনা জাল (বানোয়াট) কমপক্ষে মুনকার যা জাল বা মাউযুর কাছাকাছি।

আবদুর রউফ ভাই এবং আহলে হাদীস/ওহাবী এভাবে সাধারণ মানুষদের ইন্টারনেটে, ফেসবুকে সাধারণ মানুষদের যে বিভ্রান্ত করেছেন [যেমন তিনি রেফারেন্স দিয়েছেন বুখারী , মুসলিম, তিরমীযী ইত্যাদী। তিনি রেফারেন্স দিয়েছেন যেমন বুখারী ১০২ পৃ: প্র: খ: আযীযল হক। হা: ৪৩৫ ১ম খ: আ: প্র: হা: ৬৯৬ । অর্থাত তিনি বুঝিয়েছেন বুখারী শরীফের ১০২ পৃষ্ঠা প্রথম খন্ড আযীযল হক। হাশিয়া (ব্যাখ্যা)৪৩৫, ১ম খন্ড আ: প্রকাশনী হাশিয়া (ব্যাখ্যা) ৬৯৬। অর্থাত উনারা হাদীসের রেফারেন্স দিচ্ছেন হাদীস গ্রন্থের তাদের নিজস্ব মনগড়া ব্যাখ্যা গ্রন্থ দিয়ে। অথচ স্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানূষেরা ভাববে তিনি বোধ হয় হাদীস গ্রন্থের রেফারেন্স দিয়েছেন। আর এভাবেই ধোকা খাবে ব্লগারগন।]









ú
Top