♥শানে গাউসুল আজম দস্তগীর (রা)♥

তিনি আল্লাহর ওলীগনের মধ্যে সেরা ওলি তাই ওনাকে ওলীকুল শিরমনি বলা হয়।
ওনার বিভিন্ন লক্বব রয়েছে সেগুলোর মধ্যে কিছু নাম যেমন:-

• Shaykh
("Leader")
নেতা
• Abd al-Qadir
("Servant of the All-Powerful")
সর্বশক্তিমান আল্লাহর বান্দা
• Al-Jilani
("One Who Is from Gilan")
তিনি জীলান থেকে
• Muhyi’d-Din
("Reviver of the Religion")
দ্বীনের পুনর্জীবনদান কারী
• Al-Ghaws al-A'zam
• ("The Supreme Helper")
মহীয়ান/শ্রেষ্ঠতম সাহায্যকারী
দস্তগীর (Dastgir) - দস্ত অর্থ হাত & গীর অর্থ ধরা
(হাত ধরা মানে Hand holder means he is helper)
• Sultan al-Awliya
("The King of the Saints")
অলিকুল সরদার /বাদশাহ
• Al-Hasani Al-Husaini
("The descendant of both Imam al-Hasan and Imam al-Husain)
ইমাম হাসান (আ) ও ইমাম হোসাইন (আ) এর বংশধর

সুন্নীরা মনে করে যে এতে দোষের কিছু নেই তাই অতীতের আলিমগনও বড়পীর (রহ) কে এভাবেই সম্বোধন করতেন কিন্তু ওহাবী সালাফীরা এসব নতুন ফির্কা এখন এটাকে শিরিক বলে ইদানিং প্রচার করতেসেন।
আসুন বিশ্লেষণ করি:-

১) ওনারা আল্লাহর হেদায়াতপ্রাপ্ত তাই ওলিগনের ওসিলা দিয়ে দোয়া চাইলে তা সাথে সাথে কবুল হয়ে যায়।আমাদের পাপীদের জন্য আল্লাহ তাদের উসিলায় সহায় হন।

২) আমরা কার থেকে সাহায্য গ্রহন না করি? মাতা-পিতা,আত্তীয় স্বজন সবার থেকে সাহায্য কামনা করি তখন তো ওহাবীরা বলে না যে এক আল্লাহ ব্যতীত তাদের কাছে সাহায্য চেয়েছ এটা শিরিক হবে?
আসলে আমরা যার কাছেই চাই না কেন মোট কথা হল আল্লাহ দাতা আর সকল সৃষ্টি একে অপরকে সাহায্য করার একটা মাধ্যম (ওসিলা) মাত্র।

৩) সাহাবীগন রাসুল (সা) কে ওসিলা করে সাহায্য চেয়েছেন,কখনও কখনও একজন সাহাবী অপরজন সাহাবীকে ওসীলা করে সাহায্য চেয়েছেন। আমরা তাদেরই অনুসরন করি এখন আমরা নবী-রাসুল,সাহাবা,ইমামগন,ওলিগন ও আল্লাহর সমস্ত প্রিয় বান্দাদের ওসীলা দিয়ে আল্লাহর কাছে চাই আল্লাহসাহায্য করেন।

৪) আল্লাহর ক্ষমতা প্রাপ্ত কারো কাছে রুহানী সাহায্য চাইলে তারা যদি সাহায্য করেন তাহলেও আমরা এটাই বিশ্বাস করি যে আল্লাহর ক্ষমতা দিয়েছেন বলেই ওনারা পারেন আল্লাহর ক্ষমতা ছাড়া গাছের পাতাও নড়ে না।

৫) বিভিন্ন হাদিসে প্রমান পাওয়া যায় বৃষ্টি ও খরার সময় রাসুলের ও সাহাবাগন একে অপরকে ওসীলা করে দোয়া চাইত এটা পরোক্ষ ভাবে তাদের সাহায্য প্রার্থী হয় নাই কি?

৬) রাসুল (সা), সাহাবায়ে কেরাম,শহীদ,ওলী,আলেম,হাফিজ, কুরআন, রোজা কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহর কাছে পাপী বান্দার জান্নাতের জন্য শুপারিস করে জান্নাতে নিয়ে যাবেন তাহলে মানুষ মৃত্যুর পর কারো সাহায্য নিলে জায়েয হবে অথচ দুনিয়াতে তা হারাম হয়ে যায় কতই আশ্চর্যের কথা।

৩ লক্ষ হাদিসের হাফিজ ইমাম গাজ্জালী(রহ) বলেন,

যার কাছে জীবিত অবস্থায় সাহায্য চাওয়া জায়েয তার ওফাতেত পরও তার কাছে সাহায্য চাওয়া জায়েয।

Note:- অবশ্যই তার এই আকিদা থাকতে হবে যে মুলত আল্লাহর প্রদত্ত ক্ষমতা দিয়েই ওলীগন সাহায্য করে থাকেন আর অবশ্যই তা জায়েয কাজের জন্য হতে হবে।


সাবধান! নিশ্চয়ই আল্লাহর অলিগণের কোন ভয় নেই, এবং তারা কোন বিষয় এ চিন্তিতও নহে । তাঁদের জন্য আছে সুসংবাদ দুনিয়া ও আখেরাতে, আল্লাহর কথার কোন পরিবর্তন হয় না, উহাই মহা সাফল্য । (সুরাঃ ইউনুছ, আয়াতঃ ৬২-৬৪) ।


আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: আল্লাহ্ তা’আলা বলেন: যে ব্যক্তি আমার অলীর সাথে শত্রুতা করে, আমি তার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করছি। আমার বান্দার প্রতি যা ফরয করেছি তা দ্বারাই সে আমার অধিক নৈকট্য লাভ করে। আমার বান্দা নফল কাজের মাধ্যমেও আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে। অবশেষে আমি তাকে ভালবেসে ফেলি। যখন আমি তাকে ভালবাসি, তখন আমি তার কান হয়ে যাইযা দিয়ে সে শোনে, তার চোখ হয়ে যাই যা দিয়ে সে দেখে, তার হাত হয়ে যাই যা দিয়ে সে ধরে এবং তার পা হয়ে যাই যা দিয়ে সে চলাফেরা করে। সে আমার কাছে কিছু চাইলে, আমি তাকে তা দেই। সে যদি আমার নিকট আশ্রয় কামনা করে, তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দেই। আমি যা করার ইচ্ছা করি, সে ব্যাপারে কোন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগি না কেবল মুমিনের আত্মার ব্যাপার ছাড়া। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার মন্দকে অপছন্দ করি। [বুখারী: ৬৫০২]


‘গাউস’ শব্দের অর্থ হলো সাহায্যকারী। আর ‘আজম’ শব্দের অর্থ হলো বড়। যদি ‘গাউসুল আজম’ শব্দের সংযুক্ত অবস্থায় অর্থ করা হয়, তাহলে অর্থ দাঁড়ায়- (১) বড় সাহায্যকারী (২) বড় পীর আবদুল কাদের জিলানী (রাহ.)এর উপাধী। (ফিরোজুল লুগাত, পৃষ্ঠা- ৯১৮)।

★ আশরাফ আলী থানভী বড় পীর (রাহ.) সর্বস্তরের ওলী হওয়ার কারনে ওনার সাথে গাউসুল আজম হিসাবে লিখেছেন।
(কাসাসুল আউলিয়া- ১ম ঘটনা)

★ হযরত আশরাফ আলী থানভী লিখেন,"
হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রাহ.) এর যে ধোপা ছিল সে কিনা কবরে যাওয়ার পর ফেরেস্তারা তাকে দ্বীন সম্পর্কে প্রশ্ন করার পর সে উত্তর দিয়েছিল, আমার ধর্ম বড় পীরের ধর্ম। একথা বলার পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। আশরাফ আলী থানভী এর ঘটনাবলীর সাথে গাউসুল আজম ব্যবহার করেছেন বড়পীরের শানে।

Reference :-
 আশরাফ আলী থানভীর বয়ান (মূল উর্দূ- পছন্দিদাহ ওয়াক্বিয়াহ্) যার বাংলা অনুবাদ করেন বাংলাদেশের ঢাকা মিরপুর দারুর রাশাদ মাদ্রাসার মুহাদ্দিস হাফেজ মাওলানা হাবিবুর রহমান সাহেব ও সংকলক হিসাবে দারুল উলুম দেওবন্দ (ইন্ডিয়ার) সম্মানিত শিক হযরত মাওলানা ক্বারী আবুল হাসান আযমীর নাম রয়েছে। উক্ত বই এর ৪৬ নং পৃষ্ঠায় হযরত বড়পীরের ধোপা শীর্ষক একটা ঘটনা।

আর এখন সেই তার অনুসারীরা বলে গাউসুল আজম বলা শিরিক।



★ দেওবন্দি ওহাবীরাও নিজেদের মুরব্বী রশীদ আহমদ
গাঙ্গুহীকে গাউছুল আযম বলে ডেকেছে!! নাউযুবিল্লাহ

Reference :


বলেছে কিনা প্রমাণ দেখুন...
তাযকিরাতুর রশীদ ১ম খন্ড ১৩ পৃষ্ঠা ১০ নং লাইন
প্রকাশক দারুল কিতাব দেওবন্দ।



আসুন ইস্তিগাসা ও ওসীলার আরো কিছু দলিলাদি হাদিস থেকে জেনে নেই:-

খলীফা উমর (রা:)-এর বক্তব্য ছিল নিম্নরূপ:

“হে আল্লাহ! আমরা আপনার কাছে প্রার্থনা করার সময় মহানবী (দ:)-কে ওয়াসিলা (মাধ্যমে) হিসেবে পেশ করতাম, আর আপনি বৃষ্টি দিতেন; এখন আমরা তাঁর চাচা হযরত আব্বাস (রা:)-কে ওয়াসিলা হিসেবে পেশ করছি, অতএব অনুগ্রহ করে বৃষ্টি দিন”।

এই বর্ণনাটি হযরত আনাস (রা:) হতে আল্ বুখারী (রহ:) তাঁর সহীহ্ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন। ইমাম আল্ মালেকী (রহ:) বলেন, “যে ব্যক্তি এই বর্ণনা থেকে এ কথা বুঝে নেয় যে হযরত উমর (রা:) হযরত আব্বাস (রা:)-কে ওয়াসিলা করেছেন এবং বিশ্বনবী (দ:)-কে করেন নি কেননা হযরত আব্বাস (রা:) জীবিত এবং মহানবী (দ:) ‘মৃত’, তবে ওই ব্যক্তির উপলব্ধি ক্ষমতাই মৃত।”

ইমাম সৈয়ুতী (রহ:) নিজ তারিখে খুলাফা (বৈরুত ১৯৯২, আহমদ ফারেস সম্পাদিত, পৃষ্ঠা ১৪০) গ্রন্থে এই ঘটনার পটভূমি বর্ণনা করতে গিয়ে লিখেন: “১৭ হিজরী সালে হযরত উমর (রা:) মসজিদে নব্বী সম্প্রসারণ করেন। ওই বছর হেজায অঞ্চলে খরা দেখা দেয়। সালটিকে ‘অঙ্গারের বছর’ আখ্যা দেয়া হয় (আম আল্ রামাদা)। হযরত উমর (রা:) মানুষের উপকারে বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনার সময় হযরত আব্বাস (রা:)-এর ওয়াসিলা গ্রহণ করেন। হযরত ইবনে সা’দ (রহ:) (সাহাবী) হযরত নিয়্যার আল্ আসলামী (রা:) থেকে বর্ণনা করেন যে হযরত উমর (রা:) যখন বৃষ্টির জন্যে খোদার দরবারে প্রার্থনা করতে বেরিয়ে আসেন, ওই সময় তিনি মহানবী (দ:)-এর জুব্বা (বুরদ্) মোবারক পরেছিলেন। হযরত ইবনে আওন ((রা:) বর্ণনা করেছেন যে খলীফা উমর (রা:) হযরত আব্বাস (রা:)-এর হস্ত মোবারক ওপরে তুলে ধরেন এবং বলেন, ‘হে আল্লাহ্! আমরা মহানবী (দ:)-এর সম্মানিত চাচার মধ্যস্থতায় (ওয়াসিলায়) আপনার দরবারে প্রার্থনা করছি যাতে আপনি এই খরা আমাদের কাছ থেকে দূর করে দেন এবং বৃষ্টি মঞ্জুর করেন . . . . . . ”।


“আপনার নবী (দ:)-এর চাচা” (আল্ বুখারীতে উদ্ধৃত)। আল্ লালিকার সংস্করণে তা এভাবে উদ্ধৃত “আপনার নবী (দ:)-এর সাথে সম্পর্কে হযরত আব্বাস (রা:)-এর মর্যাদা”। হযরত আব্বাস (রা:) এ উপলক্ষে বলেন, “হে আল্লাহ্! কোনো শাস্তিই পাপ ছাড়া অবতীর্ণ হয় না, আর তা তওবা (অনুতপ্ত হওয়া) ছাড়া মোচনও হয় না। মানুষেরা আপনার নবী (দ:)-এর সাথে আমার সম্পর্কের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত আমার মর্যাদার ওয়াস্তে আপনার করুণাপ্রার্থী। আর এই হলো আমাদের হাত যা আপনার দরবারের দিকে তোলা; যদিও আমাদের অনেক পাপ, তবুও আমাদের কপালের উপরিবর্তী কেশগুচ্ছ অনুতপ্ত; অতএব, আমাদের বৃষ্টি দান করুন এবং আপনার নবী (দ:)-কে তাঁর চাচার সত্তায় অম্লান রাখুন।” অতঃপর আকাশ থেকে রশির মতো মোটা (অর্থাৎ ভারী) বর্ষণ আরম্ভ হলো এবং মানুষেরা হযরত আব্বাসের (রা:) কাছে এসে হাত বুলিয়ে দিয়ে বল্লো, “আপনাকে মোবারকবাদ (অভিনন্দন), মক্কা ও মদীনা (হারামাইন শরীফাইন)-এর সেচকারী।” হযরত উমর ফারুক (রা:) এমতাবস্থায় বলেন, “তিনি হলেন আল্লাহর কাছে মধ্যস্থতাকারী এবং নৈকট্যের মকাম (স্থান)।” এ বর্ণনাটি আল্ আনসাব পুস্তকে আল্ যুবায়ের ইবনে বক্কর (রহ:) থেকে উদ্ধৃত করেছেন ইবনে হাজর (রহ:) তাঁর ফাত্হুল বারী গ্রন্থে (২:৪৯৭)



এক বেদুঈন আরব আমাদের মহানবী (দ:)-কে বলেন, “আমরা এমন সময় আপনার শরণাপন্ন হয়েছি যখন আমাদের কুমারীদের দুধ শুকিয়ে গেছে, আর মায়েরা আপন শিশুর জীবনের চেয়ে নিজের জীবন সম্পর্কে বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। ওই শিশু ক্ষুধায় হাত নামিয়ে স্থবির বসে আছে; কেননা এই ক্ষিদে জ্বালাময় এবং বিরামহীন। খাওয়ার মতো কিছুই আর আমাদের জনগোষ্ঠির কাছে নেই, কেবল আছে তেতো শশা জাতীয় সবজি এবং রক্তমিশ্রিত উটের পশম। আমাদের আশ্রয় নেয়ার মতো আর কেউ নেই আপনি ছাড়া। কেননা নবী (দ:) ছাড়া মানুষেরা আর কোথায়ই বা আশ্রয় নেবে”?

এমতাবস্থায় মহানবী (দ:) উঠে দাঁড়ালেন এবং তাঁর জুব্বা মোবারক টানতে টানতে মিম্বরে আরোহণ করলেন। অতঃপর আরয করলেন: “হে আল্লাহ্! আমাদের বৃষ্টি মঞ্জুর করুন।” অমনি ভারী বর্ষণ আরম্ভ হলো। এ দেখে তিনি বল্লেন, “আবু তালিব (নবীর চাচা) আজ জীবিত থাকলে এ দৃশ্য দেখে নয়ন জুড়াতেন। ওই বেদুঈন (আবু তালেব) যা বলেছেন কে আছো তা পুনরায় আবৃত্তি করবে আমাদের উদ্দেশ্যে”? এই কথা শুনে হযরত আলী (রা:) উঠে দাঁড়িয়ে আরয করলেন, “হে রাসূল (দ:) আমার মনে হয় আপনি তাঁর এই কথা বোঝাচ্ছেন, “শুভ্র সেই সত্তা যার চেহারা মোবারক দ্বারা মেঘমালা কামনা করা হয়, যিনি এতিম অনাথদের লালন-পালনকারী ও বিধবাদের রক্ষক। তাঁরই মধ্যস্থতায় হাশেম গোত্র দুর্যোগ থেকে আশ্রয় চায়; কেননা তারা তাঁরই মধ্যে খুঁজে পায় মহা অনুগ্রহ ও করুণা . . . . . .”।

এই হাসীসটি আল্ বায়হাকী বর্ণনা করেছেন তাঁর দালাইল আল্ নুবুয়্যত গ্রন্থে (৬:১৪১), ইবনে কাসির তার আল্ বেদায়া ওয়ান্ নেহায়া পুস্তকে (৬:৯০-৯১) এবং ইবনে হাজর তাঁর ফাত্হুল বারী বইয়ে (১৯৮৯ সংস্করণ, ২:৬২৯)।




(খ) হযরত সাওয়াদ ইবনে কারীব আল্ সাদুসী (রা:) কবিতার আকারে আবৃত্তি করেন-

“সত্যি আপনি হলেন আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্তিতে নবীদের মাঝে সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম’; মহানতম ও নির্মলতম পিতামাতার পুত্র সন্তান; অতএব, এই সাওয়াদ ইবনে কারীবের জন্যে ওই দিন সুপারিশকারী হোন, যেদিন সুপারিশকারীদের মধ্যে আপনি ছাড়া আর কারো সুপারিশই আমার জন্যে ন্যূনতম উপকারী হবে না।”

এ বক্তব্য শ্রবণে রাসূলে কারীম (দ:) মৃদু হাসলেন এবং বল্লেন, “সাওয়াদ! তুমি সাফল্য অর্জন করেছ।” হাদীসটি বর্ণনা করেছেন আবু ইয়া’লা তাঁর মু’জাম বইয়ে (পৃষ্ঠা ২৬৫), তাবারানী নিজ আল্ কবীর পুস্তকে (৭:৯৪ ৬৪৭৫), আবু নু’য়াইম তাঁর দালাইল্ আল্ নুবুওয়া গ্রন্থে (পৃষ্ঠা ১১৪, অধ্যায় ৬৩), আল্ তায়মী নিজ দালাইল পুস্তকে (পৃষ্ঠা ১৩২), আল্ হাকিম তাঁর মুস্তাদ্রাক গ্রন্থে (৩:৭০৫), আল্ বায়হাকী নিজ দালাইল বইয়ে (২:২৫১), ইবনে আব্দিল বারর তাঁর ইস্তিয়াবা পুস্তকে (২:৬৭৫), ইবনে কাসির নিজ তাফসীর (৪:১৬৯) এবং বেদায়া গ্রন্থে, ইবনে হাজর তাঁর ফাত্হুল বারী (৭:১৮০) ও ইসাবা (৩:২৯৯) পুস্তকে


(গ) হযরত হাস্সান বিন সাবিত (রা:) পদ্যের আকারে আবৃত্তি করেন-

“আপনার প্রতি যাঁরা আস্থা রাখেন, ওহে তাঁদের ভিত্তি স্তম্ভ, ওহে তাঁদের আশ্রয়স্থল যাঁরা আপনার মাঝে আশ্রয় খোঁজেন, আর যাঁরা শষ্য ও বৃষ্টি খোঁজেন তাঁদের আশ্রয়দাতা, ওহে আশ্রয় অন্বেষণকারীদের প্রতিবেশী ও রক্ষাকারী, যাঁর মাঝে পূর্ণতা ও চারিত্রিক নির্মলতা সন্নিবেশ করে খোদা তা’লা তাঁর সৃষ্টিকুলের জন্যে মনোনীত করেছেন!”

এ বর্ণনাটি ইবনে আব্দিল বারর তাঁর আল্ ইস্তিয়াব গ্রন্থে (১:২৭৬) এবং ইবনে সাইয়্যেদ আল্ নাস্ নিজ মিনাহ্ আল্ মায পুস্তকে (পৃষ্ঠা ৭৩) লিপিবদ্ধ করেছেন।


(ক) ভাষ্য - ১

সাহাবী হযরত মালেক আল দার (রা:) বর্ণনা করেন-

“হযরত খলীফা উমর (রা:)-এর শাসনামলে মানুষেরা খরাপীড়িত হন। এমতাবস্থায় কেউ একজন মহানবী (দ:)-এর রওযা পাকে আসেন এবং আরয করেন, ‘হে নবী, আপনার উম্মতের জন্যে (আল্লাহর দরবারে) বৃষ্টি প্রার্থনা করুন, কেননা নিশ্চয় তারা নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে।’ অতঃপর বিশ্বনবী (দ:) এক রাতে ওই ব্যক্তির স্বপ্নে দেখা দেন এবং তাঁকে বলেন, ‘উমরের কাছে যাও এবং তাকে আমার সম্ভাষণ জানাও। তারপর তাকে বলবে যে বৃষ্টি হবে। তাকে বলবে বিচক্ষণ হতে (শাসনে)’। ওই ব্যক্তি খলীফার কাছ গিয়ে সব ঘটনা জানালেন। এতে খলীফা খুব কাঁদলেন এবং দোয়া করলেন, ‘হে প্রভু! আমি চেষ্টায় ক্রটি করি না, শুধু যা আমার ক্ষমতার বাইরে তা ছাড়া!” ইবনে কাসির তার রচিত আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া পুস্তকে (মা’আরিফ সংস্করণ ৭:৯১-৯২ এবং দার ইহইয়া আল্ তুরাস্ সংস্করণ ৭:১০৫) ইমাম বায়হাকী (রহ:)-এর দালাইল আল নুবুয়্যত (৭:৪৭) থেকে বর্ণনাটি উদ্ধৃত করে বলেন, “ইসনাদুহু সহীহ্” (এর সনদ বিশুদ্ধ); তিনি আরও ঘোষণা করেছেন, “ইসনাদুহু জাইয়্যেদুন কাওয়ী,” অর্থাৎ এর সনদ নির্ভরযোগ্য (জামেউল মাসানিদ, ১:২২৩)। ইবনে আবি শায়বা (৬:৩৫২ এবং ১২:৩১-৩২) সহীহ্ সনদের সাথে এটি বর্ণনা করেছেন যা ইবনে হাজর মক্কী (রহ:) নিজ ফাত্হুল বারী, ইস্তিস্কা পুস্তকের তৃতীয় অধ্যায়ে (১৯৮৯ সংস্করণ, ২:৬২৯-৩০ ও ১৯৫৯ সংস্করণ ২:৮৯৫) সমর্থন করেছেন এ কথা বলে “রাওয়া ইবনে আবি শায়বা বি ইসনাদিন সহীহ্;” তিনি নিজ রচিত আল ইসাবা পুস্তকে (৬:১৬৪ এবং ৩:৪৮৪) বলেন যে এটি ইবনে আবি খায়তামা বর্ণনা করেছেন। এর বর্ণনাকারীদের মধ্যে আরও আছেন আল খলিলী তাঁর ইরশাদ বইয়ে (১:৩১৩-১৪) এবং ইবনে আব্দিল বারর তাঁর আল্ ইস্তিয়াব গ্রন্থে (২:৪৬৪ এবং ৩:১১৪৯)। আল্ আলবানী তার প্রণীত তাওয়াসসুল পুস্তকে (পৃষ্ঠা ১২০) এ বর্ণনাটিকে দুর্বল প্রমাণ করতে চেয়েছে, কিন্তু তাকে শায়খ মামদুহ্ নিজ  রচিত রাফ’আল্ মিনারা গ্রন্থে (২৬২-২৭৮ পৃষ্ঠা) বিস্তারিত খন্ডন করেছেন; ওতে ইবনে বা’য (ফাত্হুল বারীর হাশিয়া), আবু বকর জাযাইরীর ‘ওয়াজাউ ইয়ারকুদুন’, হাম্মাদ আল্ আনসারীর প্রবন্ধ ‘আল্ মাফহুম আল্ সহীহ্ লিল্ তাওয়াসসুল’ যার অপর শিরোনাম ‘তোহ্ফাত আল্ কারী ফী রাদ্দি আ’লাল গুমারী’ এবং অনুরূপ লেখনীর খন্ডন বিধৃত হয়েছে।

(খ) হযরত উমর ফারুক (রা:)-এর ভাষ্যানুযায়ী হযরত আব্বাস (রা:)-এর যাত মোবারকের মাধ্যমে শাফায়াত প্রার্থনা:

“ওহে মানুষেরা! রাসূলে খোদা (দ:) হযরত আব্বাস (রা:)-কে তাঁর শ্রদ্ধেয় পিতার মতো বিবেচনা করতেন; তাঁকে সম্মান করতেন এবং তাঁর অধিকারকেও। অতএব, ওহে মানুষেরা, হুজুর পাক (দ:)-এর চাচার সত্তা মোবারকের আকৃতিতে নবী করীম (দ:)-এর হুকুম মান্য কর এবং হযরত আব্বাস (রা:)-কে তোমাদের এই দুর্যোগের সময় মহাপরাক্রমশালী খোদা তা’লার দরবারে প্রার্থনাকালে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে গ্রহণ কর!”

এই বর্ণনাটি হযরত উমর ফারুক (রা:) হতে আল্ বালাযিরী নির্ভরযোগ্য সনদে লিপিবদ্ধ করেছেন; আর দুর্বল সনদে ইবনে উমর (রা:) হতে বর্ণনা করেছেন আল্ যুবায়র ইবনে বাক্কার নিজ ’আল্ ‘আনসাব’ পুস্তকে এবং ইবনে আসাকির তাঁর তারিখে দিমাশক্ গ্রন্থে (৮:৯৩২), যা ইমাম ইবনে হাজর (রহ:) কর্তৃক প্রণীত ফাত্হ পুস্তকে উদ্ধৃত হয়েছে (১৯৫৯ সংস্করণ, ২:৪৯৭)। শায়খ মাহমুদ মামদুহ্ তাঁর রাফ’আল মিনারা (১২০ পৃষ্ঠা) গ্রন্থে আল্ আলবানীর ‘তাওয়াসসুল’ পুস্তকে উত্থাপিত দাবির খন্ডন করেছেন এই মর্মে যে, ওই পুস্তকের ৬৭-৬৮ পৃষ্ঠায় আলোচ্য রেওয়ায়াতটিকে ‘মুদতারিব’ বা তালগোল পাকানো বলাটা এক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।


এ কথা সর্বজন জ্ঞাত যে, বিভিন্ন প্রাণী ও কীট-পতঙ্গ নিজেরাই বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা করে থাকে, যেভাবে নবী করীম (দ:)-এর পিঁপড়া সংক্রান্ত হাদীসটি বর্ণনা করেছে। এই হাদীস্ রেওয়ায়াত করেছেন হযরত আবু হুরায়রা (রা:) হতে দারু কুতনী, তাঁর ছাত্র আল্ হাকিম ও নিম্নবর্ণিত হাদীসবেত্তাগণ: ইবনে আবি শায়বা (৬:৬২, ৭:৭১), আবু আল শায়খ তাঁর আল্ আযামা পুস্তকে (৫:১৫৭২), তফসীরে ইবনে কাসীর (৩:৩৬০), ইমাম ইবনে হাজর তাঁর তালাখিস্ ও আল্ হাবীর গ্রন্থ দু’টোতে (২:৯৭ # ৭১৮), ইবনে আল্ মুলাক্কিন স্বরচিত খোলাসাতুল বদর বইয়ে (১:২৫০), আল্ সান’আনী নিজ সুবুলুস্ সালাম গ্রন্থে (২:৮৩), আলা শওকানী স্বরচিত নায়ল্ আল্ আওতার পুস্তকে (৪:২৭), এবং থানভী নিজ “ইলা আল্ সুনান” বইয়ে (৪:১৯৩)।


এস্তেস্কা তথা বৃষ্টির জন্যে নামাযের সময় আমাদের প্রতি সুন্নাহের বিধান হলো গবাদি ও উট-ঘোড়া ইত্যাদি পশুগুলোকেও খোলা ময়দানে বের করে আনতে হবে। কেননা, মহানবী (দ:) এরশাদ করেছেন- “(যাকাত প্রদান থেকে বিরত) ব্যক্তিদের প্রতি বৃষ্টি মঞ্জুর করা হতো না, যদি না গবাদি পশুরা থাকতো।” এ হাদীস বর্ণনা করেছেন ইবনে মাজাহ্ (রহ:)। অন্যত্র তিনি এরশাদ ফরমান- “চরে খাওয়া গবাদি পশু না হলে তোমাদের প্রতি আক্ষরিক অর্থেই শাস্তি নেমে আসতো।” এ হাদীস্ রেওয়াযাত করেছেন আবু ইয়ালা, আল্ বাযযার এবং অন্যান্যরা।

এখন আমাদের জিজ্ঞাস্য, গবাদ পশুর মধ্যস্থতা মেনে নেয়া যায়, অথচ আমাদের প্রিয়নবী (দ:)-এর শাফায়াত/

এখন আমাদের জিজ্ঞাস্য, গবাদ পশুর মধ্যস্থতা মেনে নেয়া যায়, অথচ আমাদের প্রিয়নবী (দ:)-এর শাফায়াত/ তাওয়াসসুল মানা যায় না কেন? এ কেমন আচরণ?


তাপসকুল শিরোমণি হযরত উয়ায়স করনীর শ্রেষ্টত্ব সম্বন্ধে আল্লাহর রাসুলের হাদীসের কয়েকটি বাংলা তরজমা সংযোজন করা হইল।

হযরত ওমর (রা.) বলিয়াছেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺকে বলিতে শুনিয়াছি, নিশ্চয়ই , অনুগতদিগের (খায়রুত্তাবেয়ীন) মধ্যে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি যাহার নাম উয়ায়ছ। তাহার মা আছে এবং তাহার শরীরে একটি শ্বেত চিহ্ন আছে। তোমরা (তাহার সংগে দেখা করিয়া) অনুরোধ করিবে যেন সে তোমাদের ক্ষমার জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে। (মুসলিম শরীফ ৬২৬০/ মিশকাত ৬০০৬)

হযরত উমর বিন খাত্তাব হইতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূলﷺ বলিয়াছেন, “নিশ্চয়ই ইয়েমেন হইতে তোমাদের নিকট এক লোক আসিবে যে উয়ায়ছ নামে অবিহীত। সে তাহার মাতার জন্য ইয়েমেন ত্যাগ করিতে পারে না। তাহার শরীরে শ্বেত রোগ ছিল। সে আল্লাকে ডাকিল, তাহার শ্বেত রোগ এক দিরহাম পর্যন্ত ব্যতীত দূর হইয়া গেল। তোমাদের মধ্যে যে কেহ তাহার সাক্ষাত পাও তাহাকে অনুরোধ করিবে যেন সে তোমাদের মাগফিরাতের জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে । (মুসলিম শরীফ ৬২৫৯/ মিশকাত শরীফ ৬০০৬)


রাসূলল্লাহ হযরত ওমরকে বলিলেন, উয়ায়ছ ইবনে আমর মুজাহিদগণের সাহায্যার্থে আগমনকারী ইয়েমেনবাসীদের সহিত তোমাদের নিকট আসিবে। সে মুজার গোত্রের কারণ শাখার অন্তর্ভুক্ত। তাহার ধবল রোগ ছিল। (আল্লাহর নিকট দোয়া করিবার কারণে) এক দিরহাম পরিমান স্থান ব্যতীত সে উহা হইতে আরোগ্য লাভ করে। তাহার মাতা আছে। সে তাহার মাতার সহিত সদ্ব্যবহার করে। সে আল্লাহর নিকট শপথ করিলে, আল্লাহ তাহা পূরণ করে। তাহার দ্বারা তোমাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা করাইতে সক্ষম হইলে তাহা করাইবে। (মিশকাত শরীফ)

রাসূলﷺ ফরমাইলেন, রাবী এবং মুজার গোত্রের মেষের পশম তুল্য লোক হযরত উয়ায়ছ করণীর শাফায়াতে বেহেশতে যাইবে। (মিশকাত শরীফ)

হযরত আবি মাসউদ-উল-আনসারী হতে বর্নিতঃ রাসূল ﷺ বলেছেন, “ “আমার উম্মতের ভিতর এক ব্যক্তি, যাহাকে লোকে উয়ায়েছ ইবনে আবদুল্লাহ্ করণী বলে, তাহার প্রার্থনায় অবশ্যই রাবিয়া ও মুজার এই দুই গোত্রের বকরীর পশমের সংখ্যক গুনাহ্গার উম্মতের গুনাহ্ মাফ হইবে।” (শওয়াহেদুন-নবুওয়াত/মছনবী রহীম)












Top