অত্যন্ত আফসোস ও দু:খজনক ব্যাপার না বললেই নয় বিধর্মীরা যেখানে ইসলাম নিয়ে তামাশা আর বিরোধীতা করছে তেমনি কিছু নামধারী মুসলিম (ওহাবী,আহলে আহলে হাদিস) প্রচার করছে রাসুল (দুরুদ) এর সম্মানিত পিতা মাতা নাকি ইসলাম কবুল করেন নি তাই ইমান ছাড়া দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন তাই জান্নাতী নয়। (নাউজুবিল্লাহ)
♦ওয়া তাকাল্লু বাকা ফিস-সাজেদিন।
অর্থ :- হে নবী! আমি আপনাকে সিজদাকারীদের পৃষ্ঠের মাধ্যেমে (ওইরসে) স্থানান্তরিত করেছি।
Reference :-
আল-কুরআন
♦এ আয়াত থেকে প্রমানিত হয়েছে যে আদম (আ) থেকে হযরত আব্দুল্লাহ (রা) পর্যন্ত (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর) সকল পুর্বপুরুষই মুমিন ছিলেন (যাদের পৃষ্ঠের মাধ্যমে তিনি স্থানান্তরিত হয়েছিলেন)।
Reference :-
তফসিরে - মাদারিক
♦ইন্নামাল মুশরিকুনা নাজাসুন।
অর্থ : নিশ:ন্দেহে মুশরিকরা অপবিত্র।
Reference :
(আল-কুরআন)
♦রাসুল (সা) ইরশাদ করেন," আল্লাহ তায়ালা আমাকে সর্বদা পুত: পবিত্র পৃষ্ঠদেশ থেকে পবিত্র গর্ভেই স্থানান্তরিত করেছেন। পবিত্র পরিচ্ছন্ন ২টি বংশীয় ধারার উভয়টির মধ্যেই আমি উত্তম বংশের অন্তর্ভুক্ত।
Reference:
খাসাইসে-ই-কুবরা
♦তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট
অভিজাত ব্যক্তিবর্গ থেকে এক মহান রাসুল তশরিফ এনেছেন।
Reference :-
আত-তওবা ১২৮ নং এর ব্যখায় -
★তফসিরে কাঞ্জুল ইমান
★তফসিরে নঈমী
★খাসাইসে-ই-কুবরা
♦হাদিস : আমি সর্বদা পবিত্র পৃষ্ঠসমুহ থেকে পবিত্র মাতৃগর্ভসমুহে স্থানান্তরিত হয়ে ভু-পৃষ্ঠে আবির্ভুত হয়েছি।
Reference :
দালা- ইলুন্নবুয়্যত
♦আমি প্রতিটি যুগে মানবজাতির সর্বস্থরের সর্বশ্রেষ্ঠ বংশে আবির্ভুত হয়েছি।
Reference :-
বুখারী : সিফাতুন্নবী (সা) অধ্যায়
♦আল্লাহ তায়ালা ধারাবাহিকভাবে পবিত্র পৃষ্ঠদেশ ও পবিত্র গর্ভে স্থানান্তরিত করে ভু-পৃষ্ঠে আমার বরকতয় আবির্ভাব ঘটিয়েছেন।
Reference :-
ইমাম কাজী আয়াজ(রহ) : কিতাবুশ শিফা
♦" জাহেলী যুগে 'সিফাহ' নামে যেসব অপকর্ম চলত সেগুলোর কোনটার মাধ্যমেই আমি জন্মগ্রহণ করিনি।
Reference :-
ইমাম বায়হাকি (রহ) : বায়হাকী শরীফ
♦সিফাহ - শব্দটির অর্থ হল শরিয়তের পরিভাষায় ব্যভিচার। আইয়ামে জাহেলিয়াত বা অন্ধকারযুগে এটা ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। কিন্তু রাসুলের বংশ যারা পুর্বপুরুষ ছিলেন তারা এগুলো থেকে পবিত্র ছিলেন সর্বদাই।
♦হযরত আদম(আ) এর যুগ থেকে আজ পর্যন্ত আমার পিতা-মাতাও পুর্বপুরুষগনের ওরসে পবিত্র নিকাহের মাধ্যমেই আমার আগমন হয়েছে। অপবিত্র 'সিফাহ' এর মাধ্যমে নয়। আমার পিতৃপুরুষগন আজীবন সিফাহ থেকে পবিত্র ছিলেন।
Reference :-
ইমাম তাবারানী (রহ) : তাবারানী শরীফ
♦হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস(রাঃ) বলেন একদিন নবী কারীম সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম এর খেদমতে আরজ করলাম-“ইয়া রাসুলাল্লাহ(সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম) হযরত আদম(আঃ) যখন জান্নাতে ছিলেন, তখন আপনি কোথায় ছিলেন”? হুজুর পুরনুর (সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম) মুচকি হাসি দিয়ে বললেন – “আদমের ঔরসে(পৃষ্ঠে)। তারপর হযরত নূহ(আঃ) তাঁর ঔরসে আমাকে ধারণ করে নৌকায় আরোহণ করেছিলেন। তারপর হযরত ইব্রাহিম(আঃ) এর পৃষ্ঠ দেশে । তারপর পবিত্র(ঈমান্দার) পিতা মাতাগনের মাধ্যমে আমি পৃথিবীতে আগমন করি। আমার পূর্ব পুরুষগণের মধ্যে কেহই চরিত্রহীন ছিলনা।
Reference :
(হাফেজ ইবনএ কাসীর (রহ) ওনার বেদায়া নেহায়া ২য় খণ্ড ২৫ পৃষ্ঠা)
♦জিব্রাইল(আ) সয়ং ইরশাদ করেছেন," আমি সমগ্র জাহান তদন্ত করে দেখলাম,আমি কোথাও রাসুল (সা) অপেক্ষা উত্তম পুরুষ দেখিনি, তার কোন বংশ বা গোত্র অপেক্ষা উত্তম কোন গোত্র আমার নজরে পড়েনি।
আর বনু হাশীম (রাসুলুল্লাহ (সা) এর গোত্র)
অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ কোন গোত্রই আমি দেখি নি।
Reference :-
তাবারানী শরীফ
♦আপন বংশ পরিচয় নিজ জবানে ইরশাদ করেছেন," আমি হলাম মুহাম্মদ ইবনে আব্দিল্লাহ ইবনে আব্দিল মুত্তালিব ইবনে হাশেম ইবনে মান্নাফ। এইভাবে কখনো "আদনান " পর্যন্ত নিজের বংশ সুত্র বর্ননা করেছেন।
♦হযরত আব্দুল্লাহ' ওনার নামের অর্থ হল :- ""আল্লাহর বান্দা"" আর মাতা আমেনা ওনার নামের আভিধানিক অর্থ হল:- বিশ্বস্ত, আমানতদার,আল্লাহর উপর ভরসা কারীনী,সংরক্ষীতা।সুবাহানাল্লাহ এর দারা কি বুঝলেন?
তাদের নামেই ইমানদার এর পরিচয় পাওয়া যায় শুধু তাই নয় যারা এই নাম রেখেছেন তারাও নিশ্চয় ইমানদার ছিলেন তা না হলে এমন পবিত্র নাম কিভাবে রাখলেন?
♦আদম (আ) এর ঔরস হতে মাতা হাওয়া (আ) এর পবিত্র গর্ভে ২০ বার জমজ বাচ্চা জন্ম হয় কিন্তু শীস (আ) একক ভাবে জন্মগ্রহণ করেন।কারন তিনি ছিলেন নুরে মুহাম্মদীর ধারক ও বাহক। এই নুরে মুহাম্মদী হযরত শীস (আ) এর কপালে উজ্জল ও দিপ্তীমান ছিল।আল্লাহ পাক আদম(আ) নুরে মুহাম্মদীর কথা জানিয়ে দিলেন।
আদম(আ) এর ওফাতের পর হযরত শিস(আ) সমস্ত আদম সন্তানের অবিভাবক হলেন। অত:পর আল্লাহ ওনাকে ওহীর মাধ্যমে নির্দেশ দিলেন তিনি যেন তার সন্তান " আনুশ (আ) " কে অবিভাবক ঘোষনা করেন।
তিনি "আনুশ(আ)" কে খলিফা নিযুক্ত করে আদম(আ) এর উপদেশ অনুসারে তাকে বললেন,"" এ নুর মুবারককে নিয়ে কখনও কোন অবিত্র নারীর সংস্পর্শে যাবে না; বরং সব সময় যেকোন অবস্থাতে এ "নুর" মুবারক এর পবিত্রতা রক্ষা করে চলবে।"
পরবর্তীতে প্রতিটি যুগে এ নুরের বাহকগন বংশানুক্রমে এ "ওসীয়ত" রক্ষা করেছেন।
Reference :-
★মাওয়াহিবে লাদুনিয়াহ
★সিরাতে মুহাম্মদীয়া
তফসিরকারক, ফকীহ ও মুজাদ্দিদগনের অভিমত :-
♦মুফাসসিরকুল শিরমনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) বলেন," রাসুলুল্লাহ (সা) আম্বিয়া কেরাম এর মধ্যে হযরত ইব্রাহীম (আ) ও ইসমাইল(আ) এর বংশীয় ধারায় সমস্ত সৃষ্টির প্রতি সর্বশেষ নবী হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন।
reference :
তফসির-ই-খাজিন ৫ম খন্ড ও মাদারিজুন্নবুয়্যত ২য় খন্ড
♦আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী (রহ) " রাসুলুল্লাহ (সা) এর পিতা মাতার ইমান আনা" সম্পর্কে " কিতাবুত তাযীম ওয়াল মিন্নাহ "
শিরোনামের কিতাবে ইতিবাচক বর্ননা দিয়েছেন। তাতে তিনি তাদের ইমান আনার পক্ষে অকাট্য প্রমান তো দিয়েছেনই সেই সাথে তিনি বিরোদ্ধবাসীদের বক্তব্যেরও যথাযত খন্ডন করেছেন।
♦ইমাম আব্দুল বাকী যুরকানী(রহ) বর্ননা করেন,"
রাসুলে করিম (সা) এর পিতামাতা কখনোই কাফির কিংবা মুশরিক ছিলেন না। ওনারা কুফর ও মুর্তিপুজা থেকে সর্বদাই পবিত্র ছিলেন।
reference :
যুরকানী শরহে মাওয়াহিবে লাদুনিয়্যাহ ১ম খন্ড
♦বিখ্যাত হানাফী scholar আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী হানাফী (রহ) কে চিনে না এমন কেউ নেই যারা ফতোয়া প্রনয়ন করে। হানাফী মাযহাবের শ্রেষ্ঠ ফতোয়া ""ফতোয়ায়ে শামী"" তারই প্রনিত।
তিনি বলেন,"তোমরা কি একথা জানোনা যে," আল্লাহ তায়ালা রাসুলে করিম(সা) কে ক্ষমতা দিয়েছেন।তিনি নিজ পিতা-মাতাকে পুনরায় জীবিত করেছেন ও তারাও রাসুলুল্লাহ (সা) এর নবুয়্যাত এর উপর ইমান এনেছেন।
reference :
রুদ্দুল মুহতার শরহে দুররে মুখতার
♦বিখ্যাত শায়খ মুহাক্কিক ও মুহাদ্দিস আব্দুল হক দেহলবী(রহ) লিখেছেন," ওলামায়ে কেরাম একথাই সপ্রমানসহ প্রতিষ্ঠা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা) এর পিতামাতা, উর্ধতন মাতা-মাতামহগন এমনকি আদম(আ) পর্যন্ত তার সমগ্র পিতৃপুরুষই (রাসুলের বংশ সবাই) সত্যধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।
reference :
তার বিখ্যাত কিতাব আশ' আতুল লোমআত : ১ম খন্ড
♦ইমাম কালবী (রহ) বলেন," আমি রাসুলে করিম (সা) এর উর্ধতন পাশত বছরের মাতাগনের জীবনী লিখেছি।
কোন যুগেই তাদের মধ্যে জাহেলিয়াতের কোন অপবিত্রতা ও চরিত্রহীনতার কোন প্রমান পাওয়া যায় নি।
reference :
কিতাবুশ -শিফা
♦নিশ্চই নিশ্চই ভুলবশত:ও রাসুলুল্লাহ (সা) এর পরম সম্মানিত পিতামাতা সম্পর্কে মন্দ বলোনা।তাদের সম্পর্কে কোন প্রকার কুটুক্তি করোনা।তাদের প্রতি মন্দ ধারনা পোষন করে রাসুল(সা) এর পবিত্র মনে কষ্ট দিও না।
reference :
মা-সাবাতা বিস-সুন্নাহ
♦"আবু লাহাব মরে যাওয়ার পর একদিন তার পরিবারের কিছু লোক তাকে স্বপ্নে খুবই খানাপ অবস্থায় দেখল।প্রশ্ন করা হল, তুমি কি অবস্থায় সময় কাটাচ্ছ?সে বলল "তোমাদের থেকে পৃথক হয়ে আসার পর আমার ভাগে্য ভাল কিছু নসিব হয়নি।তবে আমার (শাহাদাত) আঙ্গুল হতে পানি পাওয়া যায়।কেননা (এর দ্বারা) আমি আমার দাসী সুয়াইবাকে আযাদ করে দিয়েছিলাম।
reference :-
(সহীহ বোখারী,খ:১,পৃ:১৫৩)
যেখানে আবু লাহাবের মত কট্ট্রর কাফির মীলাদুন্নবীর নবীর খুশিতে সুয়াইবা কে মুক্ত করে করায় প্রতি সপ্তাহে একদিন সোমবার আল্লাহ তার শাস্তি হালকা করে দিয়েছেন। তাহলে যারা রাসুলুল্লাহ (সা) কে জন্ম দিয়েছেন তাদের সম্মান আল্লাহ কি কম দিবেন নাকি বেশি দিবেন?তারা কি জাহান্নামী হতে পারেন? (নাউযুবিল্লাহ)
আল্লাহ ওহাবী সালাফীদের বুঝার তৌফিক দান করুন।
♦আল্লামা আলুসী (রহ) বলেন," রাসুলুল্লাহ(সা) এর পিতামাতার বিরোদ্ধে কেউ কিছু বললে আমি তার কুফরের আশংকা করি।
reference :-
তফসিরে রুহুল মা'আনী ১ম খন্ড
♦মাতা আমেনা(রা) এর কিছু হৃদয় বিদারক বানী:-
হে আব্দুল্লাহ! দেখ তোমার ঔরসে কি মহারত্ন জন্মগ্রহণ করেছে।এই সে তোমার একমাত্র পুত্র তোমার সাক্ষাতে এসেছে।"
" মাতা আমেনা(রা) ওনার বিদায়ের মুহুর্তে রাসুলুল্লাহ (সা) ওনার আম্মাজানকে হারানোর ভয়ে কান্না করছিলেন।তখন তারা আমেনা তার নুরানী অশ্রু আচল দিয়ে মুছে দিচ্ছিলেন।আর বলেছিলেন," ওহে আমার প্রিয় বৎস।সারা দুনিয়ার মৃত্যু হলেও আমার মৃত্যু হবে না। তোমার মত সুসন্তান রেখে যাবার সৌভাগ্য আমার হয়েছে।তোমারই কারনে পৃথিবীর পুর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্তে আমার বিশ্বজোড়া সুখ্যতি চির উজ্জল থাকবে।
তখন তিনি নিম্নক্ত শ্লোকগুলো পড়ছিলেন:-
হে আমার পুত: পবিত্র বৎস। আল্লাহ তোমার মধ্যে বরকত রাখুন।
হে ঔ ব্যক্তির পুত্র যিনি মৃত্যুর ঘেরাও থেকে মুক্তি পেয়েছেন,
মহা অনুগ্রহ দাতা আল্লাহ তায়ালার সাহায্য-মদদে যেই প্রভাতে লটারী টানা হয়েছিল,যার 'ফিদিয়া' স্বরুপ কোরবানী করা হয়েছিল,
১০০ উচু উচু উট, যা আমি স্বপ্নে দেখেছি তা যদি সঠিক হয়,
তাহলে সৃষ্টির জন্য তোমাকে পয়গাম্বর বানানো হবে,
সমগ্র দুনিয়ার প্রতিই তুমি প্রেরিত হবে।
তুমি সত্য ও দ্বীন ইসলাম সহকারে প্রেরিত হবে,
যা তোমার পুন্যবান পিতৃপুরুষ হযরত ইব্রাহীম (আ) এরই ধর্ম।
আমি আল্লাহর শপথ দিয়ে তোমাকে মুর্তি প্রতিমা থেকে নিষেধ করছি স্বগোত্রিয়দের সাথে তুমি যেন সেগুলোর প্রতি বন্ধুত্ব না রাখ।
উপরোক্ত পংতিমালা আবৃতি করার পর তিনি বলতে লাগলেন,"
প্রত্যেক জীবকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং প্রত্যেক নবীনকে প্রবীন হতে হবে আর প্রত্যেক প্রবীনকে (বৃদ্ধকে) মৃত্যুবরন করতে হবে।
এখন আমি মুত্যুবরন করতে যাচ্ছি, তবে আমি সারা দুনিয়ায় চির স্মরনীয় হয়ে থাকব। এতে কোন সন্দেহ নেই যে আমি তোমাকে ভাল অবস্থায় রেখে যাচ্ছি এবং পুত: অবিত্র অবস্থায় প্রসব করেছি। এই কথা বলার পরই তিনি ইন্তেকাল করলেন।
♦উম্মে আয়মান বলেন:- আমি জ্বীন জাতিকে হযরত আমেনার মৃত্যুতে কান্না করতে শুনেছি। তারা এই কবিতাগুলো পড়তে পড়তে বিলাপ করছিল:-
আমরা পুন্যবতী, আমানদার,সৌন্দর্যের অধিকারিণী,পুত:পবিত্র সতী ও মর্যাদা সম্পন্ন একজন নারীর ইন্তেকালে ক্রন্দন করছি
তিনি আব্দুল্লাহর সহধর্মীনী, জীবন সংগিনী, শান্তশিষ্ট এবং আল্লাহর নবীর আম্মাজান।
তিনি [হযরত মুহাম্মদ (সা) ] মদীনার মিম্বরের মালিক হবেন।
♦আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (সা) কে কাফির মুশরিক দের কবরের পাশে দাঁড়াতে নিষেধ করেছেন,"" আপনি তার কবরের পাশে দাড়াবেন না।কারন তারা আল্লাহ ও রাসুলের সাথে কুফর করেছে এবং ফাসিক অবস্থায় মৃত্যু বরন করেছে।
♦লক্ষ্য করুন আল্লাহ অমুসলিম ও কাফির মুশরিক দের কবরের পাশে দাঁড়াতে নিষেধ করেছেন এবং জিয়ারত করা নিষেধ করেছেন। ওনার আব্বাজান আম্মাজান যদি অমুসলিম,কাফির,মুশরিক হতেন তাহলে আল্লাহ জিয়ারতের অনুমতি দিতেন না যেহেতু আল্লাহ নিষেধ করেন নি সেহেতু ওনারা নিশ্চই ইমানদার ছিলেন।
♦ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী(রহ) "সুবুলুন্নাজাত" এ বলেছেন,"ইমামগন ও হাফেযগনের একটি বিরাট জামাত এ অভিমত দিয়েছে যে," আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (সা) এর পিতামাতাকে জীবিত করেছেন অত:পর তারা হুজুর(সা) এর উপর ইমান এনেছেন।"
reference :
★ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী(রহ) : সুবুলুন্নাজাত
★একই মতামত দিয়েছেন চতুর্দশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ যিনি ১৫০০ কিতাব লিখেছিলেন,
আলা হযরত ইমাম আহমদ রেজাখান বেরলভী(রহ)
: কিতাবুল খামীস ও আদদারাজুল মুনীফাহ আবাইশ শরীফা।
♦শির্ষস্থানীয় Islamic Scholars দের মধ্যে আরো যারা রাসুলুল্লাহ (সা) এর মাতাপিতার ইমানের ব্যপারে মতামত দিয়েছেন তাদের কিছু নাম উল্লেখ করা হল:-
২) শায়েখুল মুহাদ্দেসীন আহমদ ইবনে খতীব আল-বাগদাদী
৩) ইমাম আবুল কাসেম আলী ইবনে হাসান ইবনে আসাকির
৪) ইবনে আব্দুল্লাহ সুহায়লী (আর-রওজ গ্রন্থ প্রনেতা)
৫) হাফিজুল হাদিস ইমাম মুহিবুদ্দিন তাবারী (ইমাম নকভীর পর হাদিস শাত্রে যার স্থান)
৬) ইমাম নাসিরুদ্দিন ইবনুল মুনীর (শরফুল মোস্তফা কিতাবের প্রনেতা)
♦কোরআনের পরিভাষায় পবিত্র নর নারী বলতে ঈমান্দারকেই বুঝানো হয়েছে এবং খবীস বা অপবিত্র বলতে কাফের মূশরিকদেরকেই বুঝানো হয়েছে(সুরা মুমিনুন ১৮ পারা)।
♦ইবনে মোহাম্মদ কলবীর বর্ণনা সুত্রে তাঁর পিতা মোহাম্মদ কলবী(রহঃ) বলেনঃ
“আমি নবীকারীম(সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম) এর বংশধারার পুরববরতি পাঁচশত মায়ের তালিকা প্রস্তুত করেছি। তাঁদের মধ্যে আমি চরিত্রহীনতা এবং জাহেলীয়াতের কিছুই পাইনি”।
reference :(বেদায়া নেহায়া)
♦যখন নবী করীম(সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম) জীবনের শেষ প্রান্তে এসে ১০ম হিজরিতে এক লাখ চব্বিশ হাজার সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে মক্কা শরীফে হজ্জ পালন করতে আসেন, তখন বিবি আয়েশা(রাঃ)কে সাথে নিয়ে জান্নাতুল মায়াল্লাতে বিবি খাদিজ(রাঃ) এর মাজার জিয়ারত করতে গেলেন। (তখন নাম ছিল হাজুন)। হযরত আয়েশা(রাঃ) গাধার লাগাম ধরে বাইরে দাঁড়িয়ে রইলেন। নবী কারীম(সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম) জিয়ারতকালে প্রথমে খুব কাদলেন-পরে হাসলেন। হযরত আয়েশা(রাঃ) কারণ জানতে চাইলে হজুর আকরাম(সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম) বল্লেন-“আমার পিতামাতাকে আল্লাহপাক পুনঃজীবিত করে আমার সামনে হাজির করেছেন। তাঁরা নতুন করে ইসলাম গ্রহণ করে পুনরায় মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি পিতামাতাকে দেখে খুশি হয়ে হেসেছি”।
Reference :(বেদায়া নেহায়া)
♦ইমাম সোহায়লঈ(রহঃ) এর বরাত দিয়ে ইবনে কাছির এই ঘটনা বর্ণনা করেছেন।
ফতোয়ায়ে শামীতে হাফেজ নাসিরুদ্দিন বাগদাদির বরাতে হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) থেকে একখানা হাদীস বর্ণনা করে আল্লামা শামী লিখেছেন-
“আন আয়েশাতা রাদিয়াল্লাহু আনহা আন্নাহা কালাত ইন্নাল্লাহা আহইয়া আবাওয়াইহি ইকরামাল্লাহু সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম ফাআস্লামা সুম্মা মা তা কামা কানা ই কামা আহইয়াল মাওতা বিঈসা আলায়হিস সালাম”
Reference :-(রাদ্দুল মুহতারি মাতলাবু ইসলামি আবয়াইন্নাবিইয়ি)
♦হযরত আয়েশা(রাঃ) বলেন “আল্লাহতায়ালা নবী কারীম সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম এর সম্মানে তাঁর পিতামাতাকে পুনর্জীবিত করেন। তাঁরা উভয়ে নূতন করে ইসলাম গ্রহণ করেন। তরপর তাঁর পুনরায়
মৃতকে জীবিত করেন।“
Reference : (ফতোয়ায়ে শামী)
♦হযরত ইব্রাহীম(আঃ) ও হযরত ইসমাইল(আঃ) আল্লাহ্র কাছে দোয়া করেছিলেন যেন তাঁদের বংশধরদের(আরব) মধ্যে প্রত্যেক যুগেই কিছু না কিছু মুসলমান বিদ্যমান থাকে।(সুরা বাকারা ১২৮)
♦প্রমুখ পয়গাম্বার ও নেককারগণএর মাধ্যমে স্থানন্তরিত হতে হতে অবশেষে হযরত আব্দদুল্লাহ(রাঃ) এর ললাটে স্থান লাভ করেন নূরে মোহাম্মাদী(সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম)। হযরত ইসমাইল ও হযরত আব্দুল্লাহ ছিলেন জবিহউল্লাহ। নবী কারীম (সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম) স্বয়ং শুকরিয়া আদায় করে বলতেনঃ
“আমি দুই জবিহ্উল্লাহর সন্তান”।
রজব মাসের প্রারম্ভে হযরত আব্দুল্লাহ ও আমেনা(রাঃ) এর শুভ বিবাহ সম্পন্ন হয় এবং ঐ দিনেই মিনার নিকটে শিয়াবে আবি তালেব নামক স্থানে স্বামী-স্ত্রীর সাক্ষাৎ হয়। ঐ দিনেই হযরত আব্দুল্লাহ(রাঃ) এর ললাট হতে নবুয়াতের পবিত্র নূর মা আমেনা(রাঃ) এর গর্ভে সরাসর স্থানান্তরিত হয়।
Reference :(মাওয়াহেবে লাদ্দুনিয়া ও বেদায়া ওয়ান নেহায়া)।
সুতরাং আমরা এখন মুক্তকণ্ঠে বলব হযরত আব্দুল্লাহ ও হযরত আমেনা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা।
♦ওয়া তাকাল্লু বাকা ফিস-সাজেদিন।
অর্থ :- হে নবী! আমি আপনাকে সিজদাকারীদের পৃষ্ঠের মাধ্যেমে (ওইরসে) স্থানান্তরিত করেছি।
Reference :-
আল-কুরআন
♦এ আয়াত থেকে প্রমানিত হয়েছে যে আদম (আ) থেকে হযরত আব্দুল্লাহ (রা) পর্যন্ত (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর) সকল পুর্বপুরুষই মুমিন ছিলেন (যাদের পৃষ্ঠের মাধ্যমে তিনি স্থানান্তরিত হয়েছিলেন)।
Reference :-
তফসিরে - মাদারিক
♦ইন্নামাল মুশরিকুনা নাজাসুন।
অর্থ : নিশ:ন্দেহে মুশরিকরা অপবিত্র।
Reference :
(আল-কুরআন)
♦রাসুল (সা) ইরশাদ করেন," আল্লাহ তায়ালা আমাকে সর্বদা পুত: পবিত্র পৃষ্ঠদেশ থেকে পবিত্র গর্ভেই স্থানান্তরিত করেছেন। পবিত্র পরিচ্ছন্ন ২টি বংশীয় ধারার উভয়টির মধ্যেই আমি উত্তম বংশের অন্তর্ভুক্ত।
Reference:
খাসাইসে-ই-কুবরা
♦তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট
অভিজাত ব্যক্তিবর্গ থেকে এক মহান রাসুল তশরিফ এনেছেন।
Reference :-
আত-তওবা ১২৮ নং এর ব্যখায় -
★তফসিরে কাঞ্জুল ইমান
★তফসিরে নঈমী
★খাসাইসে-ই-কুবরা
♦হাদিস : আমি সর্বদা পবিত্র পৃষ্ঠসমুহ থেকে পবিত্র মাতৃগর্ভসমুহে স্থানান্তরিত হয়ে ভু-পৃষ্ঠে আবির্ভুত হয়েছি।
Reference :
দালা- ইলুন্নবুয়্যত
♦আমি প্রতিটি যুগে মানবজাতির সর্বস্থরের সর্বশ্রেষ্ঠ বংশে আবির্ভুত হয়েছি।
Reference :-
বুখারী : সিফাতুন্নবী (সা) অধ্যায়
♦আল্লাহ তায়ালা ধারাবাহিকভাবে পবিত্র পৃষ্ঠদেশ ও পবিত্র গর্ভে স্থানান্তরিত করে ভু-পৃষ্ঠে আমার বরকতয় আবির্ভাব ঘটিয়েছেন।
Reference :-
ইমাম কাজী আয়াজ(রহ) : কিতাবুশ শিফা
♦" জাহেলী যুগে 'সিফাহ' নামে যেসব অপকর্ম চলত সেগুলোর কোনটার মাধ্যমেই আমি জন্মগ্রহণ করিনি।
Reference :-
ইমাম বায়হাকি (রহ) : বায়হাকী শরীফ
♦সিফাহ - শব্দটির অর্থ হল শরিয়তের পরিভাষায় ব্যভিচার। আইয়ামে জাহেলিয়াত বা অন্ধকারযুগে এটা ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। কিন্তু রাসুলের বংশ যারা পুর্বপুরুষ ছিলেন তারা এগুলো থেকে পবিত্র ছিলেন সর্বদাই।
♦হযরত আদম(আ) এর যুগ থেকে আজ পর্যন্ত আমার পিতা-মাতাও পুর্বপুরুষগনের ওরসে পবিত্র নিকাহের মাধ্যমেই আমার আগমন হয়েছে। অপবিত্র 'সিফাহ' এর মাধ্যমে নয়। আমার পিতৃপুরুষগন আজীবন সিফাহ থেকে পবিত্র ছিলেন।
Reference :-
ইমাম তাবারানী (রহ) : তাবারানী শরীফ
♦হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস(রাঃ) বলেন একদিন নবী কারীম সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম এর খেদমতে আরজ করলাম-“ইয়া রাসুলাল্লাহ(সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম) হযরত আদম(আঃ) যখন জান্নাতে ছিলেন, তখন আপনি কোথায় ছিলেন”? হুজুর পুরনুর (সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম) মুচকি হাসি দিয়ে বললেন – “আদমের ঔরসে(পৃষ্ঠে)। তারপর হযরত নূহ(আঃ) তাঁর ঔরসে আমাকে ধারণ করে নৌকায় আরোহণ করেছিলেন। তারপর হযরত ইব্রাহিম(আঃ) এর পৃষ্ঠ দেশে । তারপর পবিত্র(ঈমান্দার) পিতা মাতাগনের মাধ্যমে আমি পৃথিবীতে আগমন করি। আমার পূর্ব পুরুষগণের মধ্যে কেহই চরিত্রহীন ছিলনা।
Reference :
(হাফেজ ইবনএ কাসীর (রহ) ওনার বেদায়া নেহায়া ২য় খণ্ড ২৫ পৃষ্ঠা)
♦জিব্রাইল(আ) সয়ং ইরশাদ করেছেন," আমি সমগ্র জাহান তদন্ত করে দেখলাম,আমি কোথাও রাসুল (সা) অপেক্ষা উত্তম পুরুষ দেখিনি, তার কোন বংশ বা গোত্র অপেক্ষা উত্তম কোন গোত্র আমার নজরে পড়েনি।
আর বনু হাশীম (রাসুলুল্লাহ (সা) এর গোত্র)
অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ কোন গোত্রই আমি দেখি নি।
Reference :-
তাবারানী শরীফ
♦আপন বংশ পরিচয় নিজ জবানে ইরশাদ করেছেন," আমি হলাম মুহাম্মদ ইবনে আব্দিল্লাহ ইবনে আব্দিল মুত্তালিব ইবনে হাশেম ইবনে মান্নাফ। এইভাবে কখনো "আদনান " পর্যন্ত নিজের বংশ সুত্র বর্ননা করেছেন।
♦হযরত আব্দুল্লাহ' ওনার নামের অর্থ হল :- ""আল্লাহর বান্দা"" আর মাতা আমেনা ওনার নামের আভিধানিক অর্থ হল:- বিশ্বস্ত, আমানতদার,আল্লাহর উপর ভরসা কারীনী,সংরক্ষীতা।সুবাহানাল্লাহ এর দারা কি বুঝলেন?
তাদের নামেই ইমানদার এর পরিচয় পাওয়া যায় শুধু তাই নয় যারা এই নাম রেখেছেন তারাও নিশ্চয় ইমানদার ছিলেন তা না হলে এমন পবিত্র নাম কিভাবে রাখলেন?
♦আদম (আ) এর ঔরস হতে মাতা হাওয়া (আ) এর পবিত্র গর্ভে ২০ বার জমজ বাচ্চা জন্ম হয় কিন্তু শীস (আ) একক ভাবে জন্মগ্রহণ করেন।কারন তিনি ছিলেন নুরে মুহাম্মদীর ধারক ও বাহক। এই নুরে মুহাম্মদী হযরত শীস (আ) এর কপালে উজ্জল ও দিপ্তীমান ছিল।আল্লাহ পাক আদম(আ) নুরে মুহাম্মদীর কথা জানিয়ে দিলেন।
আদম(আ) এর ওফাতের পর হযরত শিস(আ) সমস্ত আদম সন্তানের অবিভাবক হলেন। অত:পর আল্লাহ ওনাকে ওহীর মাধ্যমে নির্দেশ দিলেন তিনি যেন তার সন্তান " আনুশ (আ) " কে অবিভাবক ঘোষনা করেন।
তিনি "আনুশ(আ)" কে খলিফা নিযুক্ত করে আদম(আ) এর উপদেশ অনুসারে তাকে বললেন,"" এ নুর মুবারককে নিয়ে কখনও কোন অবিত্র নারীর সংস্পর্শে যাবে না; বরং সব সময় যেকোন অবস্থাতে এ "নুর" মুবারক এর পবিত্রতা রক্ষা করে চলবে।"
পরবর্তীতে প্রতিটি যুগে এ নুরের বাহকগন বংশানুক্রমে এ "ওসীয়ত" রক্ষা করেছেন।
Reference :-
★মাওয়াহিবে লাদুনিয়াহ
★সিরাতে মুহাম্মদীয়া
তফসিরকারক, ফকীহ ও মুজাদ্দিদগনের অভিমত :-
♦মুফাসসিরকুল শিরমনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) বলেন," রাসুলুল্লাহ (সা) আম্বিয়া কেরাম এর মধ্যে হযরত ইব্রাহীম (আ) ও ইসমাইল(আ) এর বংশীয় ধারায় সমস্ত সৃষ্টির প্রতি সর্বশেষ নবী হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন।
reference :
তফসির-ই-খাজিন ৫ম খন্ড ও মাদারিজুন্নবুয়্যত ২য় খন্ড
♦আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী (রহ) " রাসুলুল্লাহ (সা) এর পিতা মাতার ইমান আনা" সম্পর্কে " কিতাবুত তাযীম ওয়াল মিন্নাহ "
শিরোনামের কিতাবে ইতিবাচক বর্ননা দিয়েছেন। তাতে তিনি তাদের ইমান আনার পক্ষে অকাট্য প্রমান তো দিয়েছেনই সেই সাথে তিনি বিরোদ্ধবাসীদের বক্তব্যেরও যথাযত খন্ডন করেছেন।
♦ইমাম আব্দুল বাকী যুরকানী(রহ) বর্ননা করেন,"
রাসুলে করিম (সা) এর পিতামাতা কখনোই কাফির কিংবা মুশরিক ছিলেন না। ওনারা কুফর ও মুর্তিপুজা থেকে সর্বদাই পবিত্র ছিলেন।
reference :
যুরকানী শরহে মাওয়াহিবে লাদুনিয়্যাহ ১ম খন্ড
♦বিখ্যাত হানাফী scholar আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী হানাফী (রহ) কে চিনে না এমন কেউ নেই যারা ফতোয়া প্রনয়ন করে। হানাফী মাযহাবের শ্রেষ্ঠ ফতোয়া ""ফতোয়ায়ে শামী"" তারই প্রনিত।
তিনি বলেন,"তোমরা কি একথা জানোনা যে," আল্লাহ তায়ালা রাসুলে করিম(সা) কে ক্ষমতা দিয়েছেন।তিনি নিজ পিতা-মাতাকে পুনরায় জীবিত করেছেন ও তারাও রাসুলুল্লাহ (সা) এর নবুয়্যাত এর উপর ইমান এনেছেন।
reference :
রুদ্দুল মুহতার শরহে দুররে মুখতার
♦বিখ্যাত শায়খ মুহাক্কিক ও মুহাদ্দিস আব্দুল হক দেহলবী(রহ) লিখেছেন," ওলামায়ে কেরাম একথাই সপ্রমানসহ প্রতিষ্ঠা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা) এর পিতামাতা, উর্ধতন মাতা-মাতামহগন এমনকি আদম(আ) পর্যন্ত তার সমগ্র পিতৃপুরুষই (রাসুলের বংশ সবাই) সত্যধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।
reference :
তার বিখ্যাত কিতাব আশ' আতুল লোমআত : ১ম খন্ড
♦ইমাম কালবী (রহ) বলেন," আমি রাসুলে করিম (সা) এর উর্ধতন পাশত বছরের মাতাগনের জীবনী লিখেছি।
কোন যুগেই তাদের মধ্যে জাহেলিয়াতের কোন অপবিত্রতা ও চরিত্রহীনতার কোন প্রমান পাওয়া যায় নি।
reference :
কিতাবুশ -শিফা
♦নিশ্চই নিশ্চই ভুলবশত:ও রাসুলুল্লাহ (সা) এর পরম সম্মানিত পিতামাতা সম্পর্কে মন্দ বলোনা।তাদের সম্পর্কে কোন প্রকার কুটুক্তি করোনা।তাদের প্রতি মন্দ ধারনা পোষন করে রাসুল(সা) এর পবিত্র মনে কষ্ট দিও না।
reference :
মা-সাবাতা বিস-সুন্নাহ
♦"আবু লাহাব মরে যাওয়ার পর একদিন তার পরিবারের কিছু লোক তাকে স্বপ্নে খুবই খানাপ অবস্থায় দেখল।প্রশ্ন করা হল, তুমি কি অবস্থায় সময় কাটাচ্ছ?সে বলল "তোমাদের থেকে পৃথক হয়ে আসার পর আমার ভাগে্য ভাল কিছু নসিব হয়নি।তবে আমার (শাহাদাত) আঙ্গুল হতে পানি পাওয়া যায়।কেননা (এর দ্বারা) আমি আমার দাসী সুয়াইবাকে আযাদ করে দিয়েছিলাম।
reference :-
(সহীহ বোখারী,খ:১,পৃ:১৫৩)
যেখানে আবু লাহাবের মত কট্ট্রর কাফির মীলাদুন্নবীর নবীর খুশিতে সুয়াইবা কে মুক্ত করে করায় প্রতি সপ্তাহে একদিন সোমবার আল্লাহ তার শাস্তি হালকা করে দিয়েছেন। তাহলে যারা রাসুলুল্লাহ (সা) কে জন্ম দিয়েছেন তাদের সম্মান আল্লাহ কি কম দিবেন নাকি বেশি দিবেন?তারা কি জাহান্নামী হতে পারেন? (নাউযুবিল্লাহ)
আল্লাহ ওহাবী সালাফীদের বুঝার তৌফিক দান করুন।
♦আল্লামা আলুসী (রহ) বলেন," রাসুলুল্লাহ(সা) এর পিতামাতার বিরোদ্ধে কেউ কিছু বললে আমি তার কুফরের আশংকা করি।
reference :-
তফসিরে রুহুল মা'আনী ১ম খন্ড
♦মাতা আমেনা(রা) এর কিছু হৃদয় বিদারক বানী:-
হে আব্দুল্লাহ! দেখ তোমার ঔরসে কি মহারত্ন জন্মগ্রহণ করেছে।এই সে তোমার একমাত্র পুত্র তোমার সাক্ষাতে এসেছে।"
" মাতা আমেনা(রা) ওনার বিদায়ের মুহুর্তে রাসুলুল্লাহ (সা) ওনার আম্মাজানকে হারানোর ভয়ে কান্না করছিলেন।তখন তারা আমেনা তার নুরানী অশ্রু আচল দিয়ে মুছে দিচ্ছিলেন।আর বলেছিলেন," ওহে আমার প্রিয় বৎস।সারা দুনিয়ার মৃত্যু হলেও আমার মৃত্যু হবে না। তোমার মত সুসন্তান রেখে যাবার সৌভাগ্য আমার হয়েছে।তোমারই কারনে পৃথিবীর পুর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্তে আমার বিশ্বজোড়া সুখ্যতি চির উজ্জল থাকবে।
তখন তিনি নিম্নক্ত শ্লোকগুলো পড়ছিলেন:-
হে আমার পুত: পবিত্র বৎস। আল্লাহ তোমার মধ্যে বরকত রাখুন।
হে ঔ ব্যক্তির পুত্র যিনি মৃত্যুর ঘেরাও থেকে মুক্তি পেয়েছেন,
মহা অনুগ্রহ দাতা আল্লাহ তায়ালার সাহায্য-মদদে যেই প্রভাতে লটারী টানা হয়েছিল,যার 'ফিদিয়া' স্বরুপ কোরবানী করা হয়েছিল,
১০০ উচু উচু উট, যা আমি স্বপ্নে দেখেছি তা যদি সঠিক হয়,
তাহলে সৃষ্টির জন্য তোমাকে পয়গাম্বর বানানো হবে,
সমগ্র দুনিয়ার প্রতিই তুমি প্রেরিত হবে।
তুমি সত্য ও দ্বীন ইসলাম সহকারে প্রেরিত হবে,
যা তোমার পুন্যবান পিতৃপুরুষ হযরত ইব্রাহীম (আ) এরই ধর্ম।
আমি আল্লাহর শপথ দিয়ে তোমাকে মুর্তি প্রতিমা থেকে নিষেধ করছি স্বগোত্রিয়দের সাথে তুমি যেন সেগুলোর প্রতি বন্ধুত্ব না রাখ।
উপরোক্ত পংতিমালা আবৃতি করার পর তিনি বলতে লাগলেন,"
প্রত্যেক জীবকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং প্রত্যেক নবীনকে প্রবীন হতে হবে আর প্রত্যেক প্রবীনকে (বৃদ্ধকে) মৃত্যুবরন করতে হবে।
এখন আমি মুত্যুবরন করতে যাচ্ছি, তবে আমি সারা দুনিয়ায় চির স্মরনীয় হয়ে থাকব। এতে কোন সন্দেহ নেই যে আমি তোমাকে ভাল অবস্থায় রেখে যাচ্ছি এবং পুত: অবিত্র অবস্থায় প্রসব করেছি। এই কথা বলার পরই তিনি ইন্তেকাল করলেন।
♦উম্মে আয়মান বলেন:- আমি জ্বীন জাতিকে হযরত আমেনার মৃত্যুতে কান্না করতে শুনেছি। তারা এই কবিতাগুলো পড়তে পড়তে বিলাপ করছিল:-
আমরা পুন্যবতী, আমানদার,সৌন্দর্যের অধিকারিণী,পুত:পবিত্র সতী ও মর্যাদা সম্পন্ন একজন নারীর ইন্তেকালে ক্রন্দন করছি
তিনি আব্দুল্লাহর সহধর্মীনী, জীবন সংগিনী, শান্তশিষ্ট এবং আল্লাহর নবীর আম্মাজান।
তিনি [হযরত মুহাম্মদ (সা) ] মদীনার মিম্বরের মালিক হবেন।
♦আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (সা) কে কাফির মুশরিক দের কবরের পাশে দাঁড়াতে নিষেধ করেছেন,"" আপনি তার কবরের পাশে দাড়াবেন না।কারন তারা আল্লাহ ও রাসুলের সাথে কুফর করেছে এবং ফাসিক অবস্থায় মৃত্যু বরন করেছে।
♦লক্ষ্য করুন আল্লাহ অমুসলিম ও কাফির মুশরিক দের কবরের পাশে দাঁড়াতে নিষেধ করেছেন এবং জিয়ারত করা নিষেধ করেছেন। ওনার আব্বাজান আম্মাজান যদি অমুসলিম,কাফির,মুশরিক হতেন তাহলে আল্লাহ জিয়ারতের অনুমতি দিতেন না যেহেতু আল্লাহ নিষেধ করেন নি সেহেতু ওনারা নিশ্চই ইমানদার ছিলেন।
♦ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী(রহ) "সুবুলুন্নাজাত" এ বলেছেন,"ইমামগন ও হাফেযগনের একটি বিরাট জামাত এ অভিমত দিয়েছে যে," আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (সা) এর পিতামাতাকে জীবিত করেছেন অত:পর তারা হুজুর(সা) এর উপর ইমান এনেছেন।"
reference :
★ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী(রহ) : সুবুলুন্নাজাত
★একই মতামত দিয়েছেন চতুর্দশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ যিনি ১৫০০ কিতাব লিখেছিলেন,
আলা হযরত ইমাম আহমদ রেজাখান বেরলভী(রহ)
: কিতাবুল খামীস ও আদদারাজুল মুনীফাহ আবাইশ শরীফা।
♦শির্ষস্থানীয় Islamic Scholars দের মধ্যে আরো যারা রাসুলুল্লাহ (সা) এর মাতাপিতার ইমানের ব্যপারে মতামত দিয়েছেন তাদের কিছু নাম উল্লেখ করা হল:-
১) ইমাম আবু হাফস ওমর ইবনে আহমদ ইবনে শাহীন (যিনি ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়ে ৩৩০ টি পুস্তক রচনা করেছিলেন)
২) শায়েখুল মুহাদ্দেসীন আহমদ ইবনে খতীব আল-বাগদাদী
৩) ইমাম আবুল কাসেম আলী ইবনে হাসান ইবনে আসাকির
৪) ইবনে আব্দুল্লাহ সুহায়লী (আর-রওজ গ্রন্থ প্রনেতা)
৫) হাফিজুল হাদিস ইমাম মুহিবুদ্দিন তাবারী (ইমাম নকভীর পর হাদিস শাত্রে যার স্থান)
৬) ইমাম নাসিরুদ্দিন ইবনুল মুনীর (শরফুল মোস্তফা কিতাবের প্রনেতা)
৭) ইবনে সাইয়্যেদুন্নাস ( উয়ুনুল আসর এর প্রনেতা)
৮) হাফেয ইবনে নাসিরুদ্দিন দামেস্কী
৯) শায়েখুল ইসলাম হাফেয ইমাম শিহাবুদ্দিন ইবনে হাজর আসকালানী (রহ) (ফতহুল বারী শরহে বুখারীর প্রনেতা)
১০) ইমাম ইবনুল আরাবী মালেকী
১১) ইমাম আবুল হাসান আলী ইবনে মাওয়ার্দি বসরী
(আল-হাবী আল-কবীর প্রনেতা)
১২) ইমাম মুহাম্মদ ইবনে খালাফ (সহীহ মুসলিমের ব্যখ্যা গ্রন্থ প্রনেতা
১৩) ইমাম আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে আহমদ ইবনে আবু কতবী ( তাযকিয়াহ গ্রন্থ প্রনেতা)
১৪) ইমাম ফখরুদ্দিন মুহাম্মদ ইবনে ওমর আলী রাযী
১৫) ইমাম শরফুদ্দিন মানভী
১৬) খাতেমুল হুফফাজ ইমাম আব্দুর রহমান ইবনে আবু বকর
১৭) ইমাম শিহাবুদ্দিন ইবনে হাজর হায়তামী মক্কী (আফজালুল কোরা গ্রন্থ প্রনেতা)
১৮) শায়খ নুরুদ্দিন আলী ইবনে জাযযার মিশরী
১৯) ইবনে আবী শরফা হাসানী তিলমসানী ( শরহে কিতাবুস-শিফা)
২০) মুহাক্কিক সানুসী
২১) ইমাম আরিফ বিল্লাহ
২২) ইবনে ইউসুফ ফাসী (মাতালিউল মুসাররাত শরহে দালাইলুল খায়রাত এর প্রনেতা)
২৩) খাতিমাতুল মুহাক্কেকিন আব্দুল বারী যুরকানী (মাওয়াহিবে লাদুন্নিয়ার ব্যাখ্যাকারী)
২৪) ইমামে আজাল্ল ফকিহে আকমল কিরদারী বাযযাযী (আল-মানাকিব এর প্রনেতা)
২৫) মুহাক্কিক ইবনে নুজায়ম মিশরী (আল-আশবা ওয়ান নাযাইর গ্রন্থ প্রনেতা)
২৬) শায়খ-ই-শুয়ুখ-ই-ওলামা-ই-হিন্দ মুহাদ্দিসে আব্দুল হক দেহলভী (কাঞ্জুল ফাওয়াইদ এর প্রনেতা)
২৭) ইবনে আবেদীন শামী (রুদ্দল মুহতার ও ফতোয়ায়ে শামীর প্রনেতা)
♦ আর যদি ওহাবীদের তর্কের খাতিরে মেনেও নেই যে ওনারা রাসুল (সা) এর কাছে কালিমা না পড়ে ওফাত বরন করেছেন তাহলে এই আয়াত গুলো প্রমান করে রাসুল (সা) এর পিতা-মাতা তখন আল্লাহর হুকম মোতাবেক যে দ্বীন ছিল সেই দ্বীন অনুযায়ী ওনারা মুসলিম। আবার যদি বলে কেউ যে রাসুলের আগমন হওয়ার পর সব দ্বীন ছেড়ে ইসলাম কবুল করতে হবে তাহলে বলব রাসুল (সা) তখন নবুওয়াত প্রাপ্ত হন নি যদি হত তাহলে ওনার পিতা-মাতা তখনই ইসলাম কবুল করে নিতেন।
♦নবীগনের সম্পর্কে:-
পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে,
["ফাত্তাকুল্লাহা ওয়া আতিউনি"]
অর্থ-"অতএব, তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর" (সূরা- শুয়ারা, আয়াত- ১০৮) ।
♦""তার (ইব্রাহীম) প্রতিপালক যখন তাকে বলেছিলেন, 'আত্মসমর্পণ কর'; সে বলেছিল, জগতসমূহের প্রতিপালকের কাছে আত্মসমর্পণ করলাম এবং ইব্রাহীম ও ইয়াকুব এই সম্বন্ধে তাদের পুত্রগণকে নির্দেশ দিয়ে বলেছিল, 'হে পুত্রগণ আল্লাহ্ই তোমাদের জন্য এই দ্বীনকে মনোনীত করেছিলেন । সুতরাং মুসলমান তথা আত্মসমর্পণকারী না হয়ে তোমরা কখনো মৃত্যুবরণ করো না" (সূরা- বাকারা, আয়াত- ১৩১, ১৩২) ।
পরবর্তীতে তাঁদের অনুসারীগণ নবীর নামে (ইহুদা হতে ইহুদী, ক্রাইস্ট হতে খৃষ্টান ইত্যাদি) নিজেদের নামকরণ করেন এবং উভয় দল হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-কে তাঁদের সধর্মাবলম্বী বলে দাবী করেন । এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে-
♦"তোমরা কি বলতে চাও, ইব্রাহীম, ইসমাইল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তাঁর বংশধর ইহুদী কিংবা খৃষ্টান? (হে রাসুল!) বলুন, তোমরা কি আল্লাহ্ অপেক্ষা অধিকতর জ্ঞাত" (সূরা- বাকারা, আয়াত- ১৪০) ।
♦পবিত্র কুরআনে দ্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করা হয়েছে-"বরং ইব্রাহীম (আঃ) ছিলেন হানিফ (পরম নিষ্ঠাবান) মুসলিম, তিনি মুশরিক ছিলেন না"। পবিত্র কুরআনে বহু আয়াতে হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-কে মুসলমান বলা হয়েছে । সব নবী-রাসুলের অনুসারীগণই যে মুসলমান, এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে-
["মিল্লাতা আদিকুম ইব্রাহীমু হয়া সাম্মাকুমুল মুসলিমিন"]
অর্থ-"ইহা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ, তিনি তোমাদের নাম রেখেছেন মুসলমান" (সূরা- হজ্জ, আয়াত- ৭৮) ।
আর ওনারা রাসুল (সা) আগমনের পুর্বে সত্য দ্বীনের উপরই ছিলেন।
♦কোরআনের পরিভাষায় পবিত্র নর নারী বলতে ঈমান্দারকেই বুঝানো হয়েছে এবং খবীস বা অপবিত্র বলতে কাফের মূশরিকদেরকেই বুঝানো হয়েছে(সুরা মুমিনুন ১৮ পারা)।
♦ইবনে মোহাম্মদ কলবীর বর্ণনা সুত্রে তাঁর পিতা মোহাম্মদ কলবী(রহঃ) বলেনঃ
“আমি নবীকারীম(সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম) এর বংশধারার পুরববরতি পাঁচশত মায়ের তালিকা প্রস্তুত করেছি। তাঁদের মধ্যে আমি চরিত্রহীনতা এবং জাহেলীয়াতের কিছুই পাইনি”।
reference :(বেদায়া নেহায়া)
♦যখন নবী করীম(সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম) জীবনের শেষ প্রান্তে এসে ১০ম হিজরিতে এক লাখ চব্বিশ হাজার সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে মক্কা শরীফে হজ্জ পালন করতে আসেন, তখন বিবি আয়েশা(রাঃ)কে সাথে নিয়ে জান্নাতুল মায়াল্লাতে বিবি খাদিজ(রাঃ) এর মাজার জিয়ারত করতে গেলেন। (তখন নাম ছিল হাজুন)। হযরত আয়েশা(রাঃ) গাধার লাগাম ধরে বাইরে দাঁড়িয়ে রইলেন। নবী কারীম(সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম) জিয়ারতকালে প্রথমে খুব কাদলেন-পরে হাসলেন। হযরত আয়েশা(রাঃ) কারণ জানতে চাইলে হজুর আকরাম(সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম) বল্লেন-“আমার পিতামাতাকে আল্লাহপাক পুনঃজীবিত করে আমার সামনে হাজির করেছেন। তাঁরা নতুন করে ইসলাম গ্রহণ করে পুনরায় মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি পিতামাতাকে দেখে খুশি হয়ে হেসেছি”।
Reference :(বেদায়া নেহায়া)
♦ইমাম সোহায়লঈ(রহঃ) এর বরাত দিয়ে ইবনে কাছির এই ঘটনা বর্ণনা করেছেন।
ফতোয়ায়ে শামীতে হাফেজ নাসিরুদ্দিন বাগদাদির বরাতে হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) থেকে একখানা হাদীস বর্ণনা করে আল্লামা শামী লিখেছেন-
“আন আয়েশাতা রাদিয়াল্লাহু আনহা আন্নাহা কালাত ইন্নাল্লাহা আহইয়া আবাওয়াইহি ইকরামাল্লাহু সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম ফাআস্লামা সুম্মা মা তা কামা কানা ই কামা আহইয়াল মাওতা বিঈসা আলায়হিস সালাম”
Reference :-(রাদ্দুল মুহতারি মাতলাবু ইসলামি আবয়াইন্নাবিইয়ি)
♦হযরত আয়েশা(রাঃ) বলেন “আল্লাহতায়ালা নবী কারীম সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম এর সম্মানে তাঁর পিতামাতাকে পুনর্জীবিত করেন। তাঁরা উভয়ে নূতন করে ইসলাম গ্রহণ করেন। তরপর তাঁর পুনরায়
মৃতকে জীবিত করেন।“
Reference : (ফতোয়ায়ে শামী)
♦হযরত ইব্রাহীম(আঃ) ও হযরত ইসমাইল(আঃ) আল্লাহ্র কাছে দোয়া করেছিলেন যেন তাঁদের বংশধরদের(আরব) মধ্যে প্রত্যেক যুগেই কিছু না কিছু মুসলমান বিদ্যমান থাকে।(সুরা বাকারা ১২৮)
♦প্রমুখ পয়গাম্বার ও নেককারগণএর মাধ্যমে স্থানন্তরিত হতে হতে অবশেষে হযরত আব্দদুল্লাহ(রাঃ) এর ললাটে স্থান লাভ করেন নূরে মোহাম্মাদী(সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম)। হযরত ইসমাইল ও হযরত আব্দুল্লাহ ছিলেন জবিহউল্লাহ। নবী কারীম (সাল্লাল্লাহুয়ালায়হি ওয়া সাল্লাম) স্বয়ং শুকরিয়া আদায় করে বলতেনঃ
“আমি দুই জবিহ্উল্লাহর সন্তান”।
রজব মাসের প্রারম্ভে হযরত আব্দুল্লাহ ও আমেনা(রাঃ) এর শুভ বিবাহ সম্পন্ন হয় এবং ঐ দিনেই মিনার নিকটে শিয়াবে আবি তালেব নামক স্থানে স্বামী-স্ত্রীর সাক্ষাৎ হয়। ঐ দিনেই হযরত আব্দুল্লাহ(রাঃ) এর ললাট হতে নবুয়াতের পবিত্র নূর মা আমেনা(রাঃ) এর গর্ভে সরাসর স্থানান্তরিত হয়।
Reference :(মাওয়াহেবে লাদ্দুনিয়া ও বেদায়া ওয়ান নেহায়া)।
সুতরাং আমরা এখন মুক্তকণ্ঠে বলব হযরত আব্দুল্লাহ ও হযরত আমেনা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা।
হযরত আদম (আ) ওনার পুত্র হযরত শীস আলাইহিস সালামকে ওসীয়ত করেন যে,
ان لا يوضع هذا النور الا فى المطهرات من النساء.
অর্থ: “এই পবিত্র নূর মুবারককে কোন পবিত্র নারীকে (বিবাহ করা) ব্যতীত অন্য কারো নিকট যেন আমানত রাখা না হয় [অর্থাৎ এই পবিত্র নুর মুবারক নিয়ে অন্য কোন অপবিত্র নারীর নিকট যেন তিনি গমন না করেন (নিজেকে যেন সকল অপবিত্রতা থেকে পবিত্র রাখেন)] ।” (সীরাতুল হালাবিয়া-১/৪৭, মাওলেদুল মুনাবী)
“তাহ্ক্বীকুল মাক্বাম আলা কিফাইয়াতিল আওয়াম” কিতাবে উল্লেখ রয়েছে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
لم ازل انقل من اصلاب الطاهرين الى ارحام الطاهرات.
অর্থ: “আমি সবসময় পবিত্র পুরুষগনের পৃষ্ঠ মুবারক হতে পবিত্র নারীগণদের রেহেম শরীফে স্থানান্তরিত হয়েছি।” সুবহানাল্লাহ!
নিম্নে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম নসব মুবারক (বংশধারার তালিকা) তুলে ধরা হলো।
১। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিইয়ীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ।
২। যাবীহুল্লাহিল মুকাররম, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস্ সালাম।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অতি প্রিয় নাম হচ্ছে আব্দুল্লাহ ও আর্ব্দু রহমান।” আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পিতা সেই প্রিয় নামেরই অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! (সীরাতুল হালাবিয়া ১/৯)
৩। সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস্ সালাম। তিনি উনার সম্প্রদায়ের সাইয়্যিদ .ছিলেন। (রওদুল উন্ফ ১/২৩)
তিনি সেই ব্যক্তি যিনি জাহিলী যুগেই নিজের জন্য শরাবকে হারাম করেছেন। তিনি ছিলেন মুসতাজাবুদ দাওয়াত। কুরাইশদের সহনশীল ধৈর্যশীল এবং সর্বাধিক জ্ঞানী ব্যক্তিগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। মানুষ উনার দানশীলতার জন্য উনাকে “ফাইয়াজ” লক্ববে অবহিত করতেন।” (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/৯)
৪। সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস্ সালাম।
৫। সাইয়্যিদুনা হযরত আবদে মানাফ আলাইহিস্ সালাম। উনার নাম মুগীরা।
তিনি অতি সুন্দর সীরত-ছূরত মুবারকের অধিকারী ছিলেন। সেই সৌন্দর্যের কারণে উনাকে ‘উপত্যকার চাঁদ’ লক্বব মুবারকে সম্বোধন করা হতো।” (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/১৩ রওদুল উন্ফ ১/২৫, তারিখতু তাবারী ১/২৩৭)
মূলত, সেই পবিত্র নসবনামার সকলেরই আকৃতি-প্রকৃতি, সীরত-ছূরত মুবারক ছিলো অতি উজ্জ্বল এবং সৌন্দর্যময়। সে কারণ হলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অজুদ মুবারক বা নূর মুবারক উনার অবস্থান।
৬। সাইয়্যিদুনা হযরত কুসাই আলাইহিস্ সালাম।
৭। সাইয়্যিদুনা হযরত কিলাব আলাইহিস্ সালাম।
৮। সাইয়্যিদুনা হযরত র্মুরা আলাইহিস্ সালাম।
৯। সাইয়্যিদুনা হযরত কা’ব আলাইহিস্ সালাম।
১০। সাইয়্যিদুনা হযরত লুয়াই আলাইহিস্ সালাম।
১১। সাইয়্যিদুনা হযরত গালিব আলাইহিস্ সালাম।
১২। সাইয়্যিদুনা হযরত ফিহির আলাইহিস্ সালাম।
১৩। সাইয়্যিদুনা হযরত মালিক আলাইহিস্ সালাম।
১৪। সাইয়্যিদুনা হযরত নযর আলাইহিস্ সালাম।
১৫। সাইয়্যিদুনা হযরত কিনানাহ্ আলাইহিস্ সালাম।
১৬। সাইয়্যিদুনা হযরত খুযাইমাহ্ আলাইহিস্ সালাম।
১৭। সাইয়্যিদুনা হযরত মাদ্রিকাহ্ আলাইহিস্ সালাম।
উনার নাম মুবারক আমর। এই কারণে উনাকে মাদরিকাহ্ বলা হয় যে, তিনি সেই যুগের সমস্ত সম্মান-ইজ্জত ও গৌরবের অধিকারী ছিলেন। উনার মধ্যে আখিরী রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক এমন উজ্জ¦লভাবে প্রকাশ ঘটেছিল, যা সবাই দেখতে পেতেন।” সুবহানাল্লাহ! (রওদুল উন্ফ ১/৩০)
১৮। সাইয়্যিদুনা হযরত ইলিয়াস আলাইহিস্ সালাম। তিনি ছিলেন উনার সম্প্রদায়ের সাইয়্যিদ। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “তোমরা হযরত ইলিয়াস আলাইহিস্ সালাম উনাকে গালি দিও না। কারণ, তিনি ছিলেন প্রকৃত মু’মিন। তিনিই উনার পিঠ মুবারক উনার মধ্যে আখিরী রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তালবিয়া (যা হজ্জের মধ্যে পড়া হয়) পাঠ শুনতে পেতেন।” সুবহানাল্লাহ! (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/২৭, রওদুল উন্ফ- ১/৩০)
১৯। সাইয়্যিদুনা হযরত মুদ্বার আলাইহিস্ সালাম।
উনার কন্ঠস্বর মুবারক ছিলো অত্যন্ত সুন্দর। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “তোমরা হযরত মুদ্বার আলাইহিস সালাম উনাকে গালি দিও না, মন্দ বলিও না। কারণ তিনি হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্ সালাম উনার পবিত্র দ্বীন উনার উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/২৭ রওদুল উন্ফ ১/৩০)
২০। সাইয়্যিদুনা হযরত নিযার আলাইহিস্ সালাম।
তিনি স্বীয় চক্ষু মুবারক উনার সামনে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক দেখতে পেতেন।” সর্বপ্রথম আরবী ভাষায় বিশুদ্ধ কিতাব তিনিই রচনা করেন। (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/২৮)
২১। সাইয়্যিদুনা হযরত মা’য়াদ আলাইহিস্ সালাম।
তিনি জিহাদপ্রিয় ছিলেন অর্থাৎ তিনি বড় মুজাহিদ ছিলেন। এমন কোনো জিহাদ নেই যে, তিনি বিজয়ী হননি। সুবহানাল্লাহ! (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/২৮)
২২। সাইয়্যিদুনা হযরত আদ্নান আলাইহিস্ সালাম।
২৩। সাইয়্যিদুনা হযরত আদ্দ আলাইহিস্ সালাম।
২৪। সাইয়্যিদুনা হযরত মা’কুম আলাইহিস্ সালাম।
২৫। সাইয়্যিদুনা হযরত নাহুর আলাইহিস্ সালাম।
২৬। সাইয়্যিদুনা হযরত তারিহ্ আলাইহিস্ সালাম।
২৭। সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়ারিব আলাইহিস্ সালাম।
২৮। সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াশ্যুব আলাইহিস্ সালাম।
২৯। সাইয়্যিদুনা হযরত নাবিত আলাইহিস্ সালাম।
৩০। সাইয়্যিদুনা হযরত ইসমাইল আলাইহিস্ সালাম।
তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার জলিলুল ক্বদর রসূল।
৩১। সাইয়্যিদুনা হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্ সালাম।
তিনি মুসলিম মিল্লাতের পিতা। মহান আল্লাহ পাক উনার জলিলুল ক্বদর রসূল। উনার উপর ১০খানা ছহীফা নাযিল হয়েছিল। সুবহানাল্লাহ!
৩২। সাইয়্যিদুনা হযরত তারাহ আলাইহিস্ সালাম।
যদিও কেউ কেউ সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্ সালাম উনার পিতা হিসাবে আযরের নাম উল্লেখ করেছে। নাউযুবিল্লাহ! এটা কুফরী আক্বীদা। কারণ আযর কাফির ছিলো। তাদের এ বক্তব্য সম্পূর্ণ ভুল ও অশুদ্ধ এবং কাট্টা কুফরী। কারণ ‘সীরাতুল হালাবিয়া’সহ অন্যান্য সীরাত গ্রন্থে উল্লেখ আছে
اجمع اهل الكتاب على أن ازر كان عمه. والعرب سمى العم ابا كما تسمى الخالة
অর্থাৎ আহলে কিতাবগণ উনাদের ইজমা হয়েছে যে, আযর ছিল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্ সালাম উনার চাচা। আরবরা সাধারণত চাচাকে বাবা বলে সম্বোধন করেন। যেমন খালাকে মা বলে সম্বোধন করতেন। (সীরাতুল হালাবিয়া-১/৪৫)
৩৩। সাইয়্যিদুনা হযরত নাহুর আলাইহিস্ সালাম।
৩৪। সাইয়্যিদুনা হযরত আরগুবী আলাইহিস্ সালাম।
৩৫। সাইয়্যিদুনা হযরত সারিহ্ আলাইহিস্ সালাম।
৩৬। সাইয়্যিদুনা হযরত ফালিহ্ আলাইহিস্ সালাম।
৩৭। সাইয়্যিদুনা হযরত আবির আলাইহিস্ সালাম।
৩৮। সাইয়্যিদুনা হযরত শালিখ আলাইহিস্ সালাম।
৩৯। সাইয়্যিদুনা হযরত আরফাখ্শাজ আলাইহিস্ সালাম।
৪০। সাইয়্যিদুনা হযরত শাম আলাইহিস্ সালাম।
৪১। সাইয়্যিদুনা হযরত নূহ আলাইহিস্ সালাম।
তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার জলিলুল ক্বদর রসূল। সুবহানাল্লাহ!
৪২। সাইয়্যিদুনা হযরত লাম্ক আলাইহিস্ সালাম।
৪৩। সাইয়্যিদুনা হযরত মাতুশালাখ আলাইহিস্ সালাম।
৪৪। সাইয়্যিদুনা হযরত আখনুখ আলাইহিস্ সালাম।
যিনি হযরত ইদ্রীস আলাইহিস্ সালাম নামে মাশহুর। উনার উপর ৩০খানা ছহীফা নাযিল হয়েছিল। (তারিখুত তাবারী ১/৫১৮)
৪৫। সাইয়্যিদুনা হযরত ইর্য়াদ আলাইহিস্ সালাম।
৪৬। সাইয়্যিদুনা হযরত মাহ্লাইল আলাইহিস্ সালাম।
৪৭। সাইয়্যিদুনা হযরত কাইনান আলাইহিস্ সালাম।
৪৮। সাইয়্যিদুনা হযরত আনুশ আলাইহিস্ সালাম।
৪৯। সাইয়্যিদুনা হযরত শীস আলাইহিস্ সালাম।
তিনিও মহান আল্লাহ পাক এর রসূল ছিলেন। উনার উপর ৫০খানা সহীফা নাযিল হয়েছিল।
৫০। সাইয়্যিদুনা আবুল বাশার হযরত আদম শফীউল্লাহ আলাইহিস্ সালাম।
তিনি সর্বপ্রথম নবী ও রসূল। উনার উপর ১০খানা ছহীফা নাযিল হয়েছিল।
(দালায়িলুন্ নবুওওয়াত লিল বাইহাক্বী ১/১৭৯- সীরাতু ইবনে হিশাম- ১/১-২, সীরাতুল হালাবিয়া- ১/৯, মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া, তারিখুত্ তাবারী ১/৪৯৭ রাওদুল উন্ফ ১/২৩ শরহুল আল্লামাতিয্ যারকানী ১/৩৫ ইত্যাদি)