ইস্তাওয়া শব্দের ভুল অর্থ ও সালাফীদের ভ্রান্ত মতবাদ :



ইবনে উসাইমিনের বক্তব্য:

সালাফীদের ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. আল-আকিদাতুল ওযাসিতিয়্যা নামে একটি আকিদার কিতাব লিখেছেন। আকিদাতুল ওয়াসিতিয়্যা ব্যাখ্যা লিখেছেন ইবনে উসাইমিন। তিনি এর নাম দিয়েছেন, শরহুল আকিদাতিল ওয়াসিতিয়্যা। কিতাবটি দারু ইবনিল জাওযী প্রকাশ করেছে। ইবনে উসাইমিন এ কিতাবে লিখেছে,

" ইস্তাওয়ার অর্থ হলো, উচু হওয়া ও স্থির হওয়া"

[শরহুল আকিদাতিল ওয়াসিতিয়্যা, খ.১, পৃ.৩৫৭, দারু ইবনিল জাওযী]

ইবনে জিবরীনের বক্তব্য:

সালাফী শায়খ ইবনে জিবরীন আল-আকিদাতুল ওয়াসিতিয়্যার একটি ব্যাখ্যা লিখেছেন। তিনি এর নাম দিয়েছেন, আত-তালিকাতুজ জাকিয়্যা। তিনি এ কিতাবে লিখেছেন,

" অধিকাংশ আহলে সুন্নতের মতে "ইস্তাওয়া" এর অর্থ হলো স্থির হওয়া (এটা জঘন্যতম মিথ্যা কথা)"

[আত-তা'লিকাতুজ জাকিয়্যা, পৃ.২১১-২১২, খ.১]

সালেহ আল-ফাউজানের বক্তব্য:

সালাফী শায়খ সালেহ আল-ফাউজান তার শরহু লুমআতিল ই'তেকাদ কিতাবে লিখেছে,
" সালাফে সালেহীন ইস্তাওয়ার একটি ব্যাখ্যা করেছেন " স্থির হওয়া"

[শরহু লুময়াতিল ই'তেকাদ, পৃ.৯১]



                          সালাফী শায়খদের স্ববিরোধীতা:



পূর্বে যাকে আহলে সুন্নতের আকিদা, সালাফে সালেহীনের আকিদা হিসেবে উল্লেখ করা হলো, সে আকিদা সম্পর্কে সালাফী শায়খরা বলছেন, এসব আকিদা থেকে আমরা সম্পূর্ণ মুক্ত। এধরনের দ্বিমুখী কথা সত্যিই বিস্ময়কর। সালাফীদের বিখ্যাত শায়খ, সউদি মুফতী বোর্ডের সদস্য ড. বকর আবু যায়েদ এই আকিদাকে সালাফীদের সম্পর্কে মিথ্যাচার বলে উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ ইবনে তাইমিয়ার মতে আল্লাহ তায়ালা আরশে বসে আছেন। এমনকি তার মতে আল্লাহ তায়ালা মাছির পিঠেও বসতে পারেন। ইবনে তাইমিয়া যে আল্লাহর স্থির হওযার কথা বলেছেন, ড. বকর আবু যায়েদ এটি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তার মতে যারা ইবনে তাইমিয়া সম্পর্কে এধরনের কথা বলে তারা ইবনে তাইমিয়ার উপর মিথ্যাচার করে। কারণ ইবনে তাইমিয়া আল্লাহর স্থির হওয়ার আকিদা রাখতো না। ড. বকর আবু যায়েদ লিখছেন,

" কিছু বিভ্রান্ত লোক ইবনে তাইমিয়া সম্পর্কে বলেছে, তিনি আল্লাহর আরশের উপর স্থির হওয়ার কথা বলেছেন। এটি ইবনে তাইমিয়ার উপর মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়"
[মু'জামুল মানাহিল লফজিয়্যা, পৃ.৯১]


আলবানীর বক্তব্য:

সালাফীদের শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানী লিখেছে,
" আল্লাহ তায়ালার ক্ষেত্রে স্থির হওয়ার কথা বলা বৈধ নয়। কারণ এটি মানুষের বৈশিষ্ট্য বা গুণ"
[মাওসুয়াতুল আলবানী, পৃ.৩৪]
 
Top